সীতাকুণ্ডের সব অক্সিজেন কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

আপডেট: March 17, 2023 |
Boishakhinews24.net 298
print news

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় হওয়া মামলায় কারখানাটির পরিচালক পারভেজ উদ্দিন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তাকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত সীতাকুণ্ডের সব অক্সিজেন কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে জাহাজভাঙা শিল্পমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ)।

একই সঙ্গে শিল্পপতি পারভেজকে কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে হাজির করানোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। এ ঘটনায় জড়িত শিল্প পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে বিএসবিআরএর সভাপতি আবু তাহেরের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিল্পপতি পারভেজ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সময় হাজার হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার বিনামূল্যে সরবরাহ করেছেন। বিস্ফোরণের দুর্ঘটনার পর সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের পক্ষ থেকে হতাহতদের মোট এক কোটি ১৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। তারপরও মামলা করা হয়েছে। সেই মামলায় বিএসবিআরএর সদস্য ও সীমার পরিচালক পারভেজকে কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে হাজির করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি ও পারভেজকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত সব অক্সিজেন কারখানা বন্ধ থাকবে।

এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে শনিবার সংগঠনটির উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

গত ৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল কেশবপুর এলাকার সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে সাতজন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হয়। এ ঘটনায় ৬ মার্চ রাতে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের হয়। বিস্ফোরণে প্রাণ হারানো আব্দুল কাদের মিয়ার স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

এতে আসামি করা সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের এমডি মো. মামুন উদ্দিন (৫৫), পরিচালক পারভেজ উদ্দিন (৪৮) ও আশরাফ উদ্দিন বাপ্পি (৪২), ম্যানেজার আব্দুল আলীম (৪৫), প্ল্যান্ট অপারেটর ইনচার্জ সামসুজ্জামান শিকদার (৬২), প্ল্যান্ট অপারেটর খুরশিদ আলম (৫০), সেলিম জাহান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন, অ্যাডমিন অফিসার গোলাম কিবরিয়া, অফিসার শান্তনু রায়, সামিউল, সুপারভাইজার ইদ্রিস আলী, সানা উল্লাহ, সিরাজ উদ-দৌলা, রাকিবুল ও রাজীবকে।

মামলার পর ১৪ মার্চ সন্ধ্যায় আসামি পারভেজকে নগরের জিইসি মোড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতে হাজির করানোর সময় পারভেজকে হ্যান্ডকাফ লাগানোর পাশাপাশি কোমরে দড়ি দিয়ে বাঁধার একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে।

পরে ছবিটি নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়। এদিন রাতেই বিষয়টি নজরে আসে চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সুলাইমানের। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বে থাকা এসআই অরুন কান্তি দাশের কাছ থেকে কৈফিয়ত তলব করেন। একই দিনে শিল্প পুলিশ চট্টগ্রাম ইউনিটের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশও জারি হয়।

ওই আদেশে বলা হয়, অরুন কান্তি দাশ স্কটের ইনচার্জ ছিলেন। তিনি নিজের খেয়ালখুশি মতো একজন আসামিকে কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে হাজির করেছেন।

এতে করে জনসম্মুখে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ ছাড়া এটি কর্তব্য কাজে অবহেলা, অদক্ষতা ও বিভাগীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধের শামিল। এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা সাত দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর