এজাহারে নাম না থাকলেও একজন জেল- হাজতে,অন্যজনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ

আপডেট: March 28, 2023 |

সোহরাব হোসেন, সিংগাইর প্রতিনিধি : পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বা মামলার এজাহারে নাম না থাকলেও একজনকে আটক করে থানায় এনে ছেড়ে দিয়েছে মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানা পুলিশ।

পুলিশ বলছেন, তাকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিলো।

অথচ একই মামলায় এজাহারে নাম থাকা তো দূরের কথা বাদির কোনো অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও আরেকজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত ওই ব্যক্তি গত তিন মাস ধরে হাজতবাস করছেন।

জানা গেছে, সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের খাসেরচর গ্রামের স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বা মামলায় সোমবার (২৭ মার্চ) সকাল ৯ টার দিকে মো. সিরাজুল ইসলামকে (৫৬) আটকের পর ওইদিন রাতেই তাকে ছেড়ে দেন থানার এসআই শেখ তারিকুল ইসলাম।

আটক হওয়া সিরাজুল ৩ সন্তানের জনক এবং ওই এলাকার মৃত মো. মিনা মোল্লার ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, একই মামলায় এজাহারে নাম না থাকলেও ওই গ্রামের মৃত মো. আরশেদ আলীর ছেলে মো. মহিদুর রহমানকে (৫০) গত ২৮ নভেম্বর আটক করে পুলিশ।

খবর পেয়ে মামলার বাদি থানায় উপস্থিত হয়ে মহিদুরের বিরুদ্ধে তার কোন অভিযোগ নেই বলে পুলিশকে জানান। তার পরেও পুলিশ মহিদুরকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সে তিন মাস ধরে হাজতবাস করছেন। একই মামলায় এজাহারে নাম না থাকায় আটকের পরও একজনের হাজতবাস, ও অপরজনকে ছেড়ে দেয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠেছে।

এ প্রসঙ্গে থানা থেকে সদ্য ছাড়া পাওয়া সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে ডাকলে থানায় হাজির হতে হবে মর্মে স্বাক্ষর রেখেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকমর্তা শেখ তারিকুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য  সিরাজুলকে আটক করে থানায় আনা হয়েছিলো।

পরে তাকে তার মেয়ের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। একই মামলায় এজাহারে নাম না থাকলেও মহিদুরকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপনি আমার উদ্ধর্তন কর্মকর্তার সাথে কথা বলেন ।

এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, একটি নারী ও শিশু ধর্ষণ মামলায় সিরাজুলকে আটক করে থানায় আনা হয়েছিল।

জিঞ্জাসাবাদশেষে তার পরিবারের জিন্মায় দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তাকে আবার আনা হবে।

প্রসঙ্গত, পঞ্চম শ্রেনীর ওই ছাত্রী (১২) ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে খাসেরচর বাজারের আলীম মেম্বারের নিশাত-সিফাত এন্টারপ্রাইজ নামের টিনের দোকান সংলগ্ন জনৈক মজিবরের বিল্ডিংয়ের ছাদের ওপর ছাগলের জন্য গাছের পাতা সংগ্রহ করতে যায় ।

সেখানে মোহন (৬০) নামের এক ব‍্যক্তি সুযোগবুঝে তাকে পরিত্যক্ত রুমে নিয়ে ধর্ষণ করে। এতে ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।

এজাহার দায়েরের সময় গত ২৮ জুলাই একটি বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তারের রিপোর্ট অনুযায়ী তখন গর্ভের সন্তানের বয়স ছিলো ২৪ সপ্তাহ ১ দিন।

গত ১ নভেম্বর ভিকটিমের  গর্ভের ওই সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। ভূমিষ্ঠ হওয়া আলিফ নামে ওই ছেলে সন্তানের বয়স বর্তমানে ৫ মাস।

গত ৬ আগস্ট ভিকটিমের মা বাদি হয়ে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করলে ওইদিন দিবাগত রাতে এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামি মোহনকে গ্রেফতার করেন থানা পুলিশ।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর