শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত আমজাদ হোসেন

আপডেট: December 23, 2018 |

শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চিরবিদায় নিলেন একুশে পদক ও জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার, নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক আমজাদ হোসেন। ১৪ ডিসেম্বর ব্যাংককের বামরুনিগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত পরশু সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে তার লাশ বহনকারী বিমানটি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের মাটি স্পর্শ করে। এরপর তাকে মোহাম্মদপুরের আদাবর মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রথম নামাজে জানাজা শেষে তার লাশ পৌঁছায় শ্যামলীর আপন নিবাসে। রাতভর সেখানে স্বজনদের অশ্রুসিক্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় বরেণ্য চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের লাশ শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে  জমায়েত হন প্রিয়জন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনসহ সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষ। শ্রদ্ধা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, লায়লা হাসান, মামুনুর রশীদ, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, রামেন্দু মজুমদার, ফকির আলমগীর, মোরশেদুল ইসলাম, কেরামত মাওলা, সালাউদ্দিন লাভলু, রোকেয়া প্রাচী, চিত্রনায়ক হেলাল খানসহ অনেকেই। এ ছাড়া সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, টেলিভিশন নাট্যকার সংঘ, জাসাস সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও তাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো শেষ হলে তার লাশ এটিএন বাংলায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তার প্রিয় কর্মস্থল বিএফডিসিতে লাশ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সকাল থেকেই অশ্রুসিক্ত নয়নে উপস্থিত ছিলেন তার সতীর্থরা। চলচ্চিত্রের তিন কন্যা সুচন্দা, ববিতা ও চম্পা অঝোরধারায় কান্নায় ভেঙে পড়েন। আলমগীর, ফারুক, রিয়াজ, ফেরদৌস, হেলাল খান, ডি এ তায়েব, সাইমন, অমিত হাসান, জায়েদ খান, দিলারা, নির্মাতা এ কে এম জাহাঙ্গীর খান, ছটকু আহমেদ, শেখ নজরুল ইসলাম, বদিউল আলম খোকন, গুলজার, নজরুল ইসলাম খান, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলসহ সিনিয়র থেকে বর্তমান প্রজন্মের সব নির্মাতা, শিল্পী-কলাকুশলীর ঢল নামে এফডিসিতে। শ্রদ্ধা জানায় চলচ্চিত্রসহ সব শিল্প সাংস্কৃতিক সংগঠন। আমজাদ হোসেনের নয়নমণিতে মোড়ল চরিত্রে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে শক্ত ভিত পাওয়া অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান স্বজন বিয়োগ ব্যথায় অনবরত অশ্রুপাত করেই চলেন। হুইল চেয়ারে করে শেষ দেখা দেখতে  আসেন প্রখ্যাত নির্মাতা অসুস্থ সৈয়দ সালাউদ্দীন জাকী। তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, তার ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ছবিতে অভিনয় করেছিলাম। তিনি তার ছবিতে সব সময় সুবিধাবঞ্চিত নারীর করুণ চিত্র তুলে ধরতেন। এফডিসিতে জানাজা শেষে চ্যানেল আইতে নিয়ে যাওয়া হয় তার লাশ। এরপর জামালপুর নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় গুণী এই নির্মাতার লাশ। আমজাদ হোসেনের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার মায়ের কবরের পাশে আজ সকাল ১০টায় দাফন করা হবে তাকে। চিরনিদ্রায় শায়িত হলেও চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অনন্তকাল বেঁচে থাকবেন বরেণ্য ব্যক্তিত্ব আমজাদ হোসেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর