ফরিদপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে সতিনসহ স্বামী আটক

আপডেট: May 6, 2023 |

তারেকুজ্জামান, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের তালমায় মহাসড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া পাটকলের নারী শ্রমিক মনিরা আক্তারের (২৬) হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত মনিরার স্বামী মো. সাহেব আলী (৩৮) ও সতিন জ্যোৎস্না বেগমকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুক্রবার (০৫মে) ভোরে ঢাকার দোহার থানা এলাকা থেকে সাহেব আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত ২৬ এপ্রিল গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার কহলদিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে সাহেব আলীর বড় স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বর্তমানে জেলহাজতে রায়েছেন।

শনিবার (০৬ মে) বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানায় পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন জানান, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে গত ২৩ এপ্রিল বেলা পৌনে ১১টার দিকে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মানিকনগর সেতুর পাশে রতনের পুকুর পাড় থেকে মনিরার মরদেহ উদ্ধার করে নগরকান্দা থানার পুলিশ।

মনিরা নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডুবরি গ্রামের জাফর হোসেন ও রোকেয়া বেগমের মেয়ে।

তিনি ফরিদপুর সদরের বাখুন্ডা এলাকায় অবস্থিত জোবায়দা-করিম জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। তিন বছর আগে তার সঙ্গে নগরকান্দার তালমা ইউনিয়নের কোনাগ্রামের সাহেব আলীর বিয়ে হয়।

১২ বছর আগে সাহেব আলী জ্যোৎস্না বেগমকে বিয়ে করেন।

তিনি আরও বলেন, জ্যোৎস্নার বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের কহলদিয়া গ্রামে। সাহেব আলীর ১০ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।

জ্যোৎস্নার সঙ্গে সাহেব আলীর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে এ কথা বলে তিনি মনিরাকে বিয়ে করেন। সাহেব আলী অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

মনিরাকে বিয়ে করলেও সাহেব আলী কোনাগ্রামে মায়ের সঙ্গে থাকতেন। অপরদিকে মনিরা বাখুন্ডা এলাকায় তার ফুপু ফুলজান খাতুনের সঙ্গে থাকতেন। ফুলজান খাতুন ওই পাটকলে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন আরও জানান, সাহেব আলীর সঙ্গে মনিরার পারিবারিক সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না।

তিনি (সাহেব আলী) মনিরাকে নানা বিষয়ে সন্দেহ করতেন। পাশাপাশি দীর্ঘদিন বিদেশ থেকে আসার পর সম্প্রতি তার প্রথম স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগমের সঙ্গে সাহেব আলীর সদ্ভাব গড়ে ওঠে।

এ অবস্থায় পারিবারিক কলহ এবং প্রথম স্ত্রীর প্ররোচনায় সাহেব আলী তার স্ত্রী মনিরাকে গত ২২ এপ্রিল বিকেলে বেড়াতে বের হওয়ার নাম করে তালমা ইউনিয়নে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মানিকনগর সেতুর পাশে রতনের পুকুর পাড়ে নিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং গলা, বুক ও পেটে ছুরি মেরে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

এ হত্যার ঘটনায় নিহতমনিরার ফুপু ফুলজান খাতুন বাদী হয়ে গত ২৩ এপ্রিল নগরকান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরকান্দা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিকাশ মণ্ডল বলেন, শনিবার (০৬ মে) দুপুরে সাহেব অলীকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলে পরে তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর