কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক অভিশ্রুতি বৃষ্টি মায়ের আহাজারি

আপডেট: March 2, 2024 |

আসাদুর রহমান, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: সাংবাদিক মেয়ের সাথে কথা বলবেন। তাই হন্নে হয়ে নিজের ফোন খুজছেন মা বিউটি বেগম। কখনো ফোনের জন্য চিৎকার করে সারা বাড়ি মাতম করে ফিরছেন। ফোন পেলেই মেয়ে বৃষ্টি খাতুনের কাছে ঢাকায় যাবেন।

ছোট মেয়ে বর্ষা মাকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন। প্রতিবেশীরা যেনো শোকে পাথর হয়ে গেছেন।

শুক্রবার দুপুর ২টা। রাজধানী ঢাকার বেইলী রোর্ডের অগ্নিকান্ডে নিহত সাংবাদিক অভিশ্রুতি শ্বাস্ত্রী (যার আসল নাম) বৃষ্টি খাতুনের গ্রামের বাড়ি খোকসা বনগ্রাম পশ্চিম পাড়ায় সবে খবর পৌচ্ছে।

তখন শোকের মাতম চলছে। নিহতের মা কে শান্তনা দেবার ভাষা হারিয়েছেন প্রতিবেশীরা। গ্রামের বাড়ি থাকেন মা বিউটি বেগম ও ছোট বোন দশম শ্রেনির ছাত্রী বর্ষা।

নিহত বৃষ্টির গ্রামের বাড়িতে ইডেন কলেজের একটি ক্রেষ্ট পাওয়া যায়। সেখানে অভিশ্রতি বৃষ্টি নামের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

এ ছাড়া সমস্ত কাগজ পত্রে বৃষ্টি খাতুন নাম পাওয়া গেছে। নিহত সাংবাদিকের বাবা শাবলুল আলম সবুজ রাজধানী ঢাকায় একটি বেসরকারী কোম্পানিতে চাকুরি করেন। দরিদ্র পিতার তিনটিই কন্যা শন্তান।

বড় মেয়ে বৃষ্টি খাতুন সবার বড়। মেজো মেয়ে ঝর্ণা রাজবাড়ী সরকারী কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ছোট মেয়ে বর্ষা পড়ে দশম শ্রেণিতে বৃষ্টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে পড়েছেন গ্রামের বিদ্যালয়ে।

উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন কুষ্টিয়া সরকারী কলেজে। বিসিএস ক্যাডার হওয়া স্বপ্ন নিয়ে ঢাকার ইডেন কলেজে দর্শন শাস্ত্র নিয়ে পরেছেন। উচ্চ শিক্ষা শেষ করার আগে বিসিএস কচিং নিয়ে ব্যস্ত ছিল।

নিহতের মেজ বোন ঝর্ণা জানায়, অভিশ্রুতি বৃষ্টি নামে একটি ফেজবুকের ফেক আইডি চালাতেন বৃষ্টি। এ ছাড়া সে কখনো অন্য ধর্ম গ্রহণ করেনি।

তিনমাস আগে বাড়ি এসেছিল। ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য। নিহতের ছোট বোন বর্ষা জানায়, গতকাল দুপুরে মায়ের সাথে বৃষ্টির শেষ বার মুঠো ফোনে কথা হয়। বৃষ্টি সাংবাদিকতা করলেও বাড়ি থেকে মা টাকা পাঠাতেন। বড় বোনের মৃত্যুতে তাদের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।

নিহতের চাচা জোয়াদ আলী জানান, ঢাকায় ছোট চাকুরি করে দুই মেয়েকে বাইরে রেখে শিক্ষিত করার চেষ্টা করত বাবা সবুজ। গত ঈদেও বাড়ি এসেছিল বৃষ্টি। সবার সাথে ঈদের আনন্দ করেছে মেয়েটি।

সুস্থ্য মেয়েটি নাকি পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর আব্দুল মজিদও বৃষ্টি অকাল মৃত্যুতে সমবেদনা জানা। তিনি বলেন মেয়েটি মেধাবী ছিল।

বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৬ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি করেন বৃষ্টি। স্বাধীন চেতা ছিল। ছোট বেলা থেকে সে সরকারী বড় চাকুরির স্বপ্ন দেখত

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর