সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে বন্দি তারেকুলের বাবা-মায়ের করুণ আকুতি
তারেকুজ্জামান, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে বন্দি তারেকুল ইসলামের গ্রামের বাড়িতে চলছে আহাজারি। সন্তানকে ফিরে পেতে কান্নাকাটি করছেন আল্লাহর কাছে।
বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালীর ছকড়িকান্দি গ্রামের বাড়িতে যেয়ে এ চিত্র দেখা গেলো।
বাড়িতে প্রবেশের দরজার সামনে দাঁড়াতে দেখা গেলো- তারেকুলের পিতা দেলোয়ার হোসেন নিবিষ্টচিত্তে কোরআন তেলাওয়াত করছেন।
সাংবাদিকদের নিকট এসময় তারা সন্তানকে ফিরে পাওয়ার জন্য সকলের সহায়তা কামনা করেন। একই সাথে সরকার যাতে ওই জাহাজের সকলকেই জীবিত উদ্ধার করতে পারে সেই আর্তি জানান।
স্থানীয়রা জানান, তারেকুল খুবই নম্র এবং ভদ্র একটি ছেলে ছিলো। তার মা জানান, সাত বছর বয়স থেকে কখনো নামাজ-রোজা কামাই করেনি তারেক।
এমন একটি সোনার ছেলের এমন দুর্দশার খবরে বারবার হুহু করে কেঁদে উঠছেন তার মা। ছেলের ছবি দেখে কান্না করছেন আর তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে বার্তা পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ করছেন।
স্থানীয় প্রাইমারি স্কুল থেকে পাশ করে চলে যান ঢাকায়। সেখানে মিরপুরের ড. মো. শহীদুল্লাহ্ কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করেন।
২০১২ সালে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। ২০১৪ সালে নটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরিতে যোগ দেন।
সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে নতুন করে যোগ দিয়েছিলেন ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া গোল্ডেন হক নামে বাংলাদেশি জাহাজ পরিচিত এমভি আবদুল্লাহর থার্ড অফিসার হিসেবে।
২৩ নাবিকের মধ্যে ফরিদপুরের সন্তান তারেকুলও এখন জিম্মি। বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর থার্ড অফিসার তিনি।
২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বরে বিয়ে করেন নাটোরের মেয়ে, মেডিক্যালের ছাত্রী মোসাম্মৎ তানজিয়া। বিবাহিত তারেকুল-তানজিয়া দম্পতির এক বছর এক মাস বয়সী একটি মেয়ে আছে।
বুধবার দুপুরে ফরিদপুর থেকে মধুখালীতে পৌঁছে তারেকুলের গ্রামের বাড়ি পৌঁছে দেখা গেলো তারেকুলের গ্রামের বাড়িতে ভিড় করছেন আত্মীয়-স্বজন সহ প্রতিবেশীরা।
তাদের একটিই আকুতি, যে কোনো মূল্যে তারা তাদের প্রিয় তারেকুলকে ফেরত চান।