শিক্ষা সংস্কার ও গবেষণায় মনোযোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি ইবি উপাচার্যের

আপডেট: September 30, 2024 |
inbound9121975487605717539
print news

ইবি প্রতিনিধি : শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সংস্কার বিষয়ক মতবিনিময় সভা করেছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লা।

সভায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১৪ টি সংস্কার প্রস্তাবনায় প্রায় অর্ধশত দাবি উত্থাপন করা হয়।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর)  দুপুর ১২ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক এবং প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনকরা অধ্যাপক ড আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী সহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন এবং বিভিন্ন বিভাগের সভাপতি ও শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ।

এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সেক্টরের সংস্কার প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

সভায় র‍্যাগিং ও গেস্ট রুম কালচার বন্ধ করা, ছাত্র শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ, সেশনজট নিরসনে দৃশ্যমান পদক্ষেপ, গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি, প্রশাসনিক ভবনে হয়রানি নিরসন, একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে ক্লাসে পরীক্ষা নেওয়া, পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ রাখা, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে সপ্তাহে ৭ দিন রাত বারোটা পর্যন্ত খোলা রাখা, বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর করা, শতভাগ আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নতুন বিভাগ খোলা বন্ধ রাখা, পরিবহন সমস্যার সংকট সমাধান, যে নেশন সমৃদ্ধ করন, হলের ইন্টারনেট সুবিধার মান বৃদ্ধি করা, প্রত্যেক সেমিস্টারের ফলাফল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা, শিক্ষার্থীদের অফিসিয়াল ইমেইল প্রদান করা, ক্যাফেটেরিয়া চালু করে খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করা, বহিরাগত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা, কেন্দ্রীয় মসজিদের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা এবং শিক্ষার্থীদের ল্যাব ও ক্লাসরুম সংকট সমাধানে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক দাবি উপস্থাপন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন, সুদীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে কথা বলতে পারিনি। এখন উন্মুক্ত জায়গায় আলোচনা করতে পেরে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে শুকরিয়া।

বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর এটিই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। আমি প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে গর্ববোধ করি। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের কারণে একটা সময় একাডেমিক কার্যক্রম স্থবির ছিল এবং সেশনজটের আশঙ্কা নবনিযুক্ত উপাচার্যের নেতৃত্বে কাটিয়ে ওঠতে পারবে বলে আশাবাদী।

মতবিনিময় সভায় ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘আজকে যে আমরা দাঁড়িয়ে কথা বলছি এটি একটি নতুন বাংলাদেশ।

আমরা জানি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্লাটফর্মের মাধ্যমে এই বাংলাদেশ পেয়েছি। এই বাংলাদেশ আর পিছনের দিকে ফিরে যাবে না, এই বাংলাদেশ ফ্যাসিস্টের দিকে ফিরে যাবে না।

আমি এই নতুন বাংলাদেশ না হলে ভিসি হতে পারতাম না। আমার প্রথম কাজ হলো শিক্ষা সংস্কার ও গবেষণা নিয়ে কাজ করা।’

‘আজকের শিক্ষার্থীরা যেসব সংস্কারের দাবি তুলে ধরেছেন তাদের প্রত্যেকটা দাবি যৌক্তিক। এখানে উপস্থিত কোনো ডিন বা শিক্ষক তাদের দাবিকে অস্বীকার করতে পারবে না।

এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা সেক্টর সম্পর্কে উপস্থাপন করা হয়েছে। ফলে আমার সংস্কারের কাজ আরও সহজ হয়ে উঠেছে এবং আমাকে নতুন করে ভাবতে হবে না কাজ নিয়ে।’

তিনি আরও বলেন, আমি দায়িত্ব পালনের জন্য এসেছি। এখানে আমি দায়িত্ব নিয়েছি তোমাদের জন্য কাজ করার জন্য। আমি তোমাদের আশাহত করবো না।

আমি তোমাদেরই ভাইস চ্যান্সেলর। আমি প্রতিদিন তোমাদের মুখ দেখতে চাই।

তোমাদের সাথে কথা বলে এই সংস্কার করতে চাই। সর্বশেষ বলব- এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা আমার দায়িত্ব।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর