পাকিস্তানে জিম্মি ট্রেনের সব যাত্রী উদ্ধার, ৩৩ জঙ্গি নিহত

আপডেট: March 13, 2025 |
inbound5933721439964477284
print news

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে বিদ্রোহী গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) দখলকৃত যাত্রীবাহী ট্রেনটি থেকে ৩০০ জনের বেশি জিম্মিকে মুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ৩৩ জঙ্গি নিহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।

গত মঙ্গলবার বেলুচিস্তানের বোলান জেলার কাছে একটি টানেলে প্রবেশের সময় সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা জাফর এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি ছিনতাই করে। চলন্ত ট্রেনে বোমা হামলা ও গুলি চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। এ সময় চার শতাধিক যাত্রীকে জিম্মি করে। জিম্মিদের মধ্যে অনেক নিরাপত্তা কর্মীও ছিলেন।

সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, অভিযান শুরু হওয়ার আগে বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ২১ জন বেসামরিক জিম্মি এবং চারজন সামরিক কর্মীকে হত্যা করেছে। আরও কোনো হুমকি আছে কি না, তা দেখার জন্য সেনাবাহিনী এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

সেনা মুখপাত্রের মতে, যখন ট্রেনটি আক্রমণ করা হয়েছিল তখন প্রায় ৪৪০ জন যাত্রী ছিলেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সশস্ত্র গোষ্ঠীর কিছু সদস্য ট্রেন ছেড়ে আশেপাশের পাহাড়ি এলাকায় বেশ কিছু সংখ্যক যাত্রী নিয়ে পালিয়ে যায়।

মুখপাত্র জানিয়েছেন, হামলার সময় পালিয়ে যাওয়া এবং আশেপাশের এলাকায় যাওয়া যাত্রীদের খুঁজে বের করার জন্য সেনাবাহিনী কাজ করছে। কতজন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে তা স্পষ্ট নয়।

পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ- যুক্তরাজ্য ও আমেরিকাসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বিএলএকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর তথ্য মতে, প্রায় ৪৫০ জন যাত্রী নিয়ে ৯টি বগিতে ট্রেনটি কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়ার রাজধানী পেশোয়ার যাওয়ার পথে হামলার শিকার হয়।

ট্রেনে হামলা ও যাত্রীদের জিম্মির ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে বেলুচ লিবারেশন আর্মি। যাত্রীবাহী ট্রেনে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ‘সন্ত্রাসী হামলার’ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

বিবিসির প্রতিবেদেন বলা হয়, বিএলএ হলো পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ বেলুচিস্তানের জন্য বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন অথবা স্বাধীনতা দাবিকারী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি। এর আগেও তারা সামরিক শিবির, রেলওয়ে স্টেশন এবং ট্রেনে আক্রমণ করেছে। তবে এই প্রথমবারের মতো তারা কোনো ট্রেন জিম্মি করল।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রেনে কমপক্ষে ১০০ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিলেন। স্থানীয় প্রতিবেদন অনুসারে, সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বালুচ রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি না দিলে জিম্মিদের হত্যা করার হুমকি দিয়েছিল।

হামলার সময়, সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা রেললাইনের একটি অংশ উড়িয়ে দেয় এবং একটি পাহাড়ি সুড়ঙ্গের কাছে ট্রেনে গুলি চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা হামলার সময় ট্রেনে থাকা বিপর্যয়ের দৃশ্য বর্ণনা করেছেন। যাত্রী ইসহাক নূর বিবিসিকে বলেছেন, আমরা গোলাগুলির সময় আমাদের নিঃশ্বাস আটকে রেখেছিলাম, পরবর্তী কী হবে তা জানতাম না।

হামলার সময় যাত্রীদের সাথে যোগাযোগ করতে কর্মকর্তাদের অসুবিধা হচ্ছিল। প্রত্যন্ত অঞ্চলটিতে ইন্টারনেট বা মোবাইল কভারেজ ছিল না।

সূত্র: বিবিসি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর