বগুড়ার শিবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গাংনগর মেলা


শাহজাহান আলী,বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শিবগঞ্জের গাংনগরে প্রতিবারের মতো এবারও জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী এই গাংনগর মেলা।
বিগত ৪০০ বছর ধরে বৈশাখ মাসের ১ম সোমবার অথবা বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী এ মেলা।
গাংনগর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের বিশাল জায়গা জুড়ে বসেছে মেলার দোকানপাট। ঐতিহ্যবাহী এ মেলা উপলক্ষ্যে আশেপাশের প্রায় শতাধিক গ্রাম জুড়ে চলে উৎসবের আমেজ।
একসময় এই মেলার মূল আকর্ষণ ছিল হলুদ, রসুন, শুকনা মরিচ সহ হরেক রকমের মসলার পাইকারি ও খুচরা কেনা-বেচা।
গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত মসলা ও পণ্য মেলায় বিক্রি করে মাটির হাঁড়িতে রসগোল্লা কিনে বাড়িতে ফিরতেন।
এছাড়া মেলায় কাঠের আসবাবপত্র, মাছ, মিষ্টি, বিভিন্ন খেলনার দোকানসহ বিনোদনের জন্য যাত্রা, সার্কাস, পুতুলনাচের আয়োজন থাকতো।
এবার বৈশাখ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা। সনাতন ধর্মের পূজা উপলক্ষে মেলাটি অনুষ্ঠিত হলেও মুসলমানদের মধ্যেও উৎসবের কমতি নেই।
মেলা উপলক্ষে আশেপাশের গ্রামের আত্মীয়-স্বজনদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। জামাইরা বড় বড় মাছ কিনে, মাটির হাঁড়িতে মিষ্টি কিনে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে আসেন।
সকালে মেলা ঘুরে দেখা যায়, গাংনগর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বসেছে মেলার মূল অংশ। তবে মেলার পরিধি ছড়িয়ে পড়েছে গাংনগর শিবমন্দির পর্যন্ত।
মেলার জৌলুশ কমলেও এখনো সেখানে আগের মতোই বাহারি রসগোল্লা, নানা পদের মিষ্টির পসরা দেখা যায়। মাটির হাঁড়িতে বিক্রি হচ্ছে রসগোল্লা।
আছে নিমকি, খাজা, কদমা, খাগড়াই, বাতাসা, জিলাপি, হাতি ঘোড়ার ছাঁচ, মুড়ি-মুড়কি, মাছ আকৃতির মিষ্টি, বালিশ মিষ্টিসহ হরেক রকমের মিষ্টি পণ্য।
মেলায় মিষ্টির পাশাপাশি বিভিন্ন আসবাবপত্র, মশলা, ছোটদের খেলনা সহ বড় বড় মাছের দোকান বসেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত মেলা প্রাঙ্গন। বিনোদনের জন্য সার্কাস ও হোন্ডা খেলার ব্যবস্থা রয়েছে।
দেউলী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন,বৈশাখ মাসের প্রথম সোম অথবা বৃহস্পতিবার যে দিনটি আগে আসে, সেই দিনেই বসে গাংনগরের ঐতিহ্যবাহী মেলা।
এবার বৈশাখ মাসের প্রথম দিন ছিলো সোমবার এই কারনে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে মেলা। মেলা উপলক্ষে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের জামাই ও মেয়েরা বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। মেলা উপলক্ষে আত্মীয়স্বজনেরাও নিমন্ত্রণ খেতে আসেন।