তৃতীয় দফায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা শুরু

আপডেট: July 30, 2025 |
inbound5967115613287474389
print news

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তৃতীয় দফা বাণিজ্য সংলাপের প্রথম দিনেই আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। ওয়াশিংটন ডিসিতে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক কমানো হবে। আমাদের শুল্ক উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে, তবে নির্দিষ্ট হার এখনই বলা যাচ্ছে না।”

বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৩টা থেকে ভোর সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এ বৈঠক হয়। বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী এবং ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে আলোচনা চালান সহকারী ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ব্রেন্ডন লিঞ্চ।

চলতি বছরের ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ৬০টি দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়, যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। পরে তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হলেও ৮ জুলাই নতুন করে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকরের ঘোষণা আসে। এ সিদ্ধান্ত ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পণ্যে বর্তমানে গড়ে ১৫.৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। নতুন শুল্ক কার্যকর হলে তা দাঁড়াবে প্রায় ৩৫ শতাংশ, যা রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে একটি অবস্থানপত্র পাঠায় এবং ওয়াশিংটনে শুরু হয় তিন দিনের আলোচনা। বাণিজ্য সচিব জানান, আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করেছে যে, শুধু রপ্তানি নয়, আমদানিও বাড়ানো হবে।

বাণিজ্য ঘাটতির প্রসঙ্গও আলোচনায় উঠে আসে। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে জানায়, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৬ বিলিয়ন ডলার, যেখানে ভিয়েতনামের ঘাটতি ১২৩ বিলিয়ন। এছাড়া বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনা, পাঁচ বছরে সাত লাখ টন করে গম আমদানি, সয়াবিন, এলএনজি, তুলা ও সামরিক সরঞ্জাম আমদানির পরিকল্পনার কথাও জানানো হয়।

ইতিমধ্যে ইউএসটিআর অন্য দেশগুলোর সঙ্গে যে হারে সমঝোতায় পৌঁছেছে, তা বাংলাদেশের জন্য আশার জায়গা তৈরি করছে। ভিয়েতনামের ক্ষেত্রে শুল্ক হার ২০%, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের ১৯%, জাপান ও ইইউয়ের ১৫%, আর যুক্তরাজ্যের ১০%। বাংলাদেশের জন্য হার ১৫–২০ শতাংশ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তৃতীয় দফার এই আলোচনা ১ আগস্ট শেষ হবে। আলোচনা সফল হলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর