হালাল শিল্প প্রতিষ্ঠায় মালয়েশিয়ার সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ

আপডেট: August 13, 2025 |
inbound1549123553076569258
print news

বিশ্বব্যাপী দ্রুত বিস্তৃত হালাল পণ্যের বাজারে প্রবেশের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ নিজ দেশে একটি পূর্ণাঙ্গ হালাল শিল্প পার্ক গড়তে চায়। এ লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে দেশটির হালাল শিল্প–বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “আসুন, আমরা এ বিষয়ে একসঙ্গে পদক্ষেপ নিই।”

মালয়েশিয়ার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের হালাল বিষয়ক সমন্বয়কারী দাতিন পাদুকা হাজাহ হাকিমা বিন্তি মোহাম্মদ ইউসুফ, ইসলামিক উন্নয়ন মালয়েশিয়ার (জাকিম) মহাপরিচালক সিরাজউদ্দিন বিন সুহাইমি এবং হালাল উন্নয়ন করপোরেশনের (এইচডিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাইরোল আরিফিন সাহারি।

বৈঠকে জানানো হয়, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্যের বাজারের আকার প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার; ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মালয়েশিয়া ইতিমধ্যে এই বাজারের অন্যতম বড় অংশীদার, দেশটিতে ১৪টি হালাল শিল্প পার্ক রয়েছে এবং নিজস্ব মানদণ্ড অনুযায়ী উৎপাদন ও রপ্তানিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই বিশাল সম্ভাবনাময় বাজারে প্রবেশের জন্য দেশের হালাল অবকাঠামো, নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা ও সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানে উন্নত করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে হালাল সার্টিফিকেশনের অনুমোদিত একমাত্র সংস্থা হলো ইসলামিক ফাউন্ডেশন; এ পর্যন্ত মাত্র ১২৪টি প্রতিষ্ঠান হালাল সার্টিফিকেট পেয়েছে, যা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে খুবই কম।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, “আমরা একসঙ্গে কাজ করে হালাল শিল্প পার্ক গঠনে কী কী প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করতে পারি। অনেক বাংলাদেশি কোম্পানি হালাল সার্টিফায়েড পণ্য রপ্তানিতে আগ্রহী।”

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই বৈঠককে “গভীর ও শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা” বলে উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, এটি যেন হালাল পণ্যের ওপর একটি পূর্ণাঙ্গ ক্লাসে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল।

বৈঠকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া হালাল খাতে সহযোগিতার একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে ‘হালাল কূটনীতি’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জাকিম প্রধান সিরাজউদ্দিন বিন সুহাইমি জানান, মালয়েশিয়া শিগগিরই বাংলাদেশে একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দল পাঠাবে, যারা হালাল শিল্প পার্ক গঠনের জন্য প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণে কাজ করবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর