মান্দায় পাখি নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যৃ

আপডেট: September 25, 2025 |
inbound6093739090360252007
print news

আকতারুজ্জামান নাইম, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃগ্রাম্য মাতব্বরের নেতৃত্বে জোরপূর্বক তালাকের পর প্রাপ্ত মোহরানার টাকা আদায় করতে এসে জীবনের শেষ বলি হলেন পাখি আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধূ।

এমনই ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর মান্দা উপজেলার দাওয়াইল গ্রামে।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) উপজেলার পরানপুর ইউপির দাওয়াইল-হলুদঘর সীমান্ত এলাকায় এ রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

নিহত মহিলার রক্ত মাখা লাশ হলুদঘর মোল্লাপাড়া ব্রীজ সংলগ্ন পাকা রাস্তার পার্শ্বে থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহত পাখি আক্তার উপজেলার ভারশোঁ ইউপি ও গ্রামের লবির উদ্দিন সরদারের মেয়ে।

স্থানীয়রা মহিলার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে,নিহত পাখি আক্তারের তিন মাস পূর্বে মোবাইল ফোনের পরিচয়ের সুত্র ধরে দাওয়াইল গ্রামের জিয়ারুলের ছেলে তাইজুল ইসলাম (১৭) এর সাথে বিবাহ হয়।

এরপর গত ২০-২৫ দিন পূর্বে মাতব্বর রাজ্জাকের নেতৃত্ব ১ লক্ষ টাকা মোহরানার পরিবর্তে মাত্র ২০ হাজার টাকায় তালাক দেওয়া হয় পাখিকে।ছেলে পক্ষের মাতব্বর সেজে মেয়েকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে রফাদফা করেছেন মাতব্বর রাজ্জাক।

১লক্ষ মোহরানার পরিবর্তে মেয়ের দাবি ছিল ৮০ হাজার টাকা বলে জানা গেছে। সেই ৮০ হাজার টাকার চুক্তিতে তালাকে রাজি হয়েছিলেন পাখি।

কিন্তু পাখির পাওনাটা পূরণ হতে দেননি দাওয়াইল গ্রামের রাজ্জাক মাতব্বর। তিনি কৌশলে ছেলে পক্ষের মাতব্বর সেজে মাত্র ২০ হাজার টাকায় তালাক করান নিহত পাখিকে।

সেই ২০ হাজার টাকা থেকেও মাতব্বর রাজ্জাক ৫ হাজার টাকা কর্তন করে মাত্র ১৫ হাজার টাকা দিয়েছেন পাখিকে এমন অভিযোগ গ্রামবাসীর।

পাখি তাকে ৫ হাজার টাকা কমের কথা বললে তিনি সেটা পরে দিবেন বলে তাকে আশ্বস্ত করেন।

এরপর মোহরানার বাঁকি ৫ হাজার টাকা আদায়ের জন্য প্রায়দিন অসহায় মহিলা মাতব্বর রাজ্জাকের সাথে দেখা করতেন।

ঘটনার দিন রাতেও মৃত পাখিকে মাতব্বর রাজ্জাকের সাথে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছেন স্থানীয়রা । এজন্য সন্দেহের তীর রাজ্জাক মাতব্বর ও নিহতের স্বামীর পরিবারের দিকে।

গুঞ্জন আছে, ঘটনার দিন রাত ৩ টা পর্যন্ত ওই মহিলা মাতব্বরের সাথে ছিলেন।আর সকালে লাশ হয়ে পড়ে আছেন।

নিহত পাখির বাবা লবির উদ্দিন সরদার অভিযোগ করে বলেন,মৃত্যুর জন্য মাতব্বর রাজ্জাক ও নিহতের স্বামী পরিবারের লোকজন দায়ী।

সাথে আরো কিছু স্থানীয় মাতব্বর। কয়েকদিন আগে নিহতের শাশুড়ি আমার বাড়িতে গিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে এসেছেন।

এ,ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী হলুদঘর গ্রামের রশিদুল ইসলাম কবিরাজ জানান,ঘটনার দিন রাত ৯ টার দিকে ওই মহিলাকে মাতব্বর রাজ্জাকের সাথে ঘুরাঘুরি করতে দেখেছি।

ফেটগ্রামের মাসুদ নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী যুবক জানান,ওই রাতে রাজ্জাক মতববরের সাথে আমিও তাকে ঘুরতে দেখেছি।

একই কথা জানান,হলুদঘর গ্রামের আলিমদ্দীন, গোপালপুর বাজার এলাকার সাইফুলসহ অনেকে।

এব্যাপারে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনসুর রহমান জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর