করোনা যুদ্ধের ১৫০ সাহসিনী, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তৈরি করছেন পিপিই!
মানবসভ্যতার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছে নভেল করোনাভাইরাস। দেশে দেশে চলছে লকডাউন, ঘরে বন্দি মানুষ। তবুও প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। আক্রান্ত বাড়ছে প্রতি মিনিটে। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে মারণ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে সাড়ে ১৭ লাখেরও বেশি মানুষ। মৃত্যুর সংখ্যা লাখ পেরিয়ে গেছে। কার্যকর কোন ওষুধ নেই, নেই কোন প্রতিষেধক। সমগ্র মানবজাতি এক সংকটকালীন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও পিপিই’র (পার্সোনাল প্রোটেকশন ইক্যুইপমেন্ট) প্রকট অভাব। পিপিই’র অভাবে জীবন দিতে হচ্ছে ডাক্তার-নার্স ও মেডিক্যাল কর্মীদের।
এমন পরিস্থিতিতে দেশ ও দশের স্বার্থে এগিয়ে এসেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ১৫০ জন সাহসী নারী। করোনা বিরুদ্ধে লড়াই করতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দুরন্ত গতিতে কাজ করে চলেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার রোশনারা-সুস্মিতারা। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে কারখানায় প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তৈরি করছেন পিপিই পোশাক।
নার্স-চিকিৎসকরা যাঁরা দিনরাত প্রাণপাত করে করোনা আক্রান্ত রোগীর সেবা করে চলেছেন, তাদের হাতে এই সুরক্ষাবর্ম পিপিই পোশাক তুলে দিতে লড়ে যাচ্ছেন এই ১৫০ নারী। লকডাউনে বন্ধ যানচলাচল। অগত্যা, রোজ সাইকেল চালিয়েই পৌঁছে যাচ্ছেন কারখানায়। আবার কেউ বা হেঁটেই পৌঁছচ্ছেন গন্তব্যে। তারপর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলছে পিপিই তৈরির লড়াই। রাজ্য সরকারের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী টার্গেট, প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার পিপিই পোশাক তৈরি করা। তবে কাজের মাঝেও কিন্তু করোনা সংক্রমণ এড়াতে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে ভোলেননি তারা। যতক্ষণ শিফট থাকছে, মুখে মাস্ক পরেই কাজ করছেন। বারবার স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করছেন।
শুধু কাজ নয়, কারখানায় প্রবেশের আগেও মেনে চলা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে আসার পর বিশেষ কেমিক্যালে পরিশুদ্ধ হচ্ছেন তারা। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রেখেই কাজ করছেন তারা। কারখানাও নিয়মিত স্যানিটাইজড করা হচ্ছে।
কিভাবে তৈরি হচ্ছে পিপিই পোশাক? পার্সোনাল প্রোটেকশন ইক্যুইপমেন্ট পোশাক তৈরির কাপড় দেওয়া হচ্ছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। সরকারের দেওয়া পোশাকের স্যাম্পল অনুযায়ী প্রথমে কাটিং করা হচ্ছে সেই কাপড়। তারপর ধাপে ধাপে যাবতীয় সেলাই করা হচ্ছে। কেউ কাটিং করছেন তো কেউ বা আবার সেলাই করছেন। কারও উপর আবার দায়িত্ব বর্তেছে পোশাকে ফিনিশিং টাচ দেওয়ার। পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটিই অংশ। চেন খুলে পরতে হবে পোশাক। পোশাক তৈরি হয়ে গেলে তা স্যানিটাইজড করে প্যাকেটে ভরা হচ্ছে। এরপর রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী ওই পোশাক পৌঁছে যাচ্ছে যথাস্থানে। দেশের এমন দুঃসময়ে সমাজের জন্য কাজ করতে পেরে খুশি তারা সবাই।
সূত্র- সংবাদ প্রতিদিন।
বৈশাখী নিউজ/ এপি