ইতালি ঝুঁকি নিচ্ছে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিনিময়ে

আপডেট: May 17, 2020 |

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুজেপ্পে কন্তে স্বীকার করেছেন যে, দেশটি লকডাউন আরও শিথিল করার যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে তাতে ‘সুনির্দিষ্ট ঝুঁকি’ রয়েছে।

তিনি বলেন, সংক্রমণের রেখা আবারও উর্ধ্বমুখী হতে পারে, কিন্তু টিকা আবিষ্কারের জন্য বসে থাকার মতো সক্ষমতা দেশটির আর নেই। কন্তে ঘোষণা করেছেন যে, ইতালিতে প্রবেশ এবং দেশটি থেকে বাইরে যাওয়া, ইতালির মধ্যেই ভ্রমণ আগামী ৩রা জুন থেকে চালু হবে।

শরীরচর্চা কেন্দ্র, সুইমিং পুল এবং খেলাধুলা কেন্দ্রগুলো ২৫শে মে, এবং সিনেমা ও থিয়েটার ১৫ই জুন থেকে খুলবে। দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে না গিয়েই ইতালিতে প্রবেশ করতে পারবে ইউরোপীয় পর্যটকরা।

টানা দুই মাসেরও বেশি সময় লকডাউনে থাকার পর নতুন ঘোষিত এসব পদক্ষেপ দেশটির অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার বিষয়ে বড় ধরণের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইতালির কর্মকর্তা জানান, দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩১, ৭৬৩ জন মানুষ মারা গেছে যা যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের পর সর্বোচ্চ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির সংক্রমণের হার অনেক কমেছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটির উত্তরাঞ্চলে সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর দেশজুড়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রথম ইউরোপীয় দেশ ইতালি। কিন্তু চলতি মাসের শুরুর দিকে এসব নিষেধাজ্ঞার শর্ত শিথিল করতে শুরু করে দেশটি। এর অংশ হিসেবে ৪ঠা মে থেকে পার্ক এবং কারখানা খুলে দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী কন্তে কী বলেছেন?

শনিবার সন্ধ্যার দিকে টেলিভিশন ভাষণে প্রধানমন্ত্রী কন্তে বলেন, আমরা সুনির্দিষ্ট কিছু ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছি, আর তা হলো সংক্রমণের রেখা আবারও উর্ধ্বমুখী হতে পারে।

‘এটা আমাদেরকে মেনে নিতে হবে। তা না হলে আমরা আর কখনোই নতুন করে শুরু করতে পারবো না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতালির বাণিজ্য প্রতিষেধক আবিষ্কার হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবে না কারণ, তাহলে দেশে অর্থনৈতিক ও সামাজিকে ক্ষেত্রে বড় ভাঙন দেখা দিতে পারে।

ইতালির কিছু কিছু এলাকা নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নেয়ার দাবি জানালেও প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কা সামলানোর জন্য ধীরে ধীরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ১৮ই মে থেকে দোকানপাট এবং রেস্তোরাঁ খুলে দেয়া হবে।

একই দিনে ক্যাথলিক চার্চগুলোও খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, কিন্তু সেখানে অবশ্যই কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে এবং সবাইকে মাস্ক পড়তে হবে। অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও নিজ নিজ ধর্মীয় আচার পালন করতে পারবে।

এক সময়ে এই মহামারির ক্ষেত্রে বিশ্বের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত ইতালিতে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা আরও কমে আসার পর এমন ঘোষণা দেন কন্তে।

গত ২৭শে মার্চ ৯০০ জন মারা যায় বলে জানানো হয়েছিল কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলছে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে, বাণিজ্য এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অর্থনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে ৫৫ বিলিয়ন ইউরো প্রণোদনা ঘোষণা করে দেশটির সরকার। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর