ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ করোনা শনাক্ত
মহামারি করোনার তাণ্ডবে দিশেহারা এখন দক্ষিণ এশিয়ার ভারত। প্রতিদিনের রেকর্ড সংক্রমণ ও শতশত প্রাণহানিতে আবারও দাবি উঠতে পারে লকডাউনের। দেশটিতে গত একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখের ঘরে পৌঁছেছে। আর না ফেরার দেশে ১৫ হাজারের বেশি ভারতীয়। চলমান অবস্থা অব্যহত থাকলে দেশটিতে করোনা মহামারি রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ২৯৬ জনের দেহে মিলেছে করোনার সংক্রমণ। যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৯০ হাজার ৪০১ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে মোট আক্রান্তের প্রায় ৬০ শতাংশই মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও তামিলনাড়ুতে।
আক্রান্তের পাশাপাশি করোনায় মৃত্যুও বাড়াচ্ছে উদ্বেগ। একই সময়ে ৪০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটির কবলে পড়ে ১৫ হাজার ৩০১ জনের মৃত্যু হয়েছে ভারতে।
এর মধ্যে প্রায় সাত হাজার মৃত্যু হয়েছে শুধু মহারাষ্ট্রেই। দিল্লিতেও বাড়তে বাড়তে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে দু’হাজার ৪২৯-এ। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাটে মারা গেছে ১ হাজার ৭৫৩ জন। বিগত কয়েক সপ্তাহে ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে তামিলনাড়ুর মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়াল ৮৬৬-তে।
এরপরই তালিকায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (৬১১), পশ্চিমবঙ্গ (৬০৬) ও মধ্যপ্রদেশ (৫৪২)। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৩৭৯), তেলঙ্গানা (২৩০), হরিয়ানা (১৯৮), কর্নাটক (১৭০), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৩৬) ও পঞ্জাব (১২০)।
আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়লেও প্রতিদিনই সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও স্বস্তি দিচ্ছে ভারতকে। যেখানে এখন সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীর সংখ্যা সক্রিয় আক্রান্তের চেয়ে অধিক। যা মোট আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৯৪০ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট ২ লাখ ৮৫ হাজার ৬৩৭ জন বেঁচে ফিরেছেন।
শুরু থেকেই দেশে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে আক্রান্ত বেড় এখন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৭৪১ জন। বিগত কয়েক দিনের তুলনায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে রাজ্যটিতে। শুক্রবার চার হাজার ৮৪১ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে।
একই পথে রাজধানী দিল্লি। বেশ দ্রুতগতিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে সেখানে। এখনও অবধি ৭৩ হাজার ৭৮০ জন ভাইরাসটির শিকার হয়েছেন। তৃতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ৭০ হাজার ৯৭৭ জন। চতুর্থ স্থানে থাকা গুজরাটে করোনার ভুক্তভোগী ২৯ হাজার ৫২০ জন।
উত্তরপ্রদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা শুক্রবার ২০ হাজার পার করেছে। করোনা সংক্রমণের হিসাবে এরপর রয়েছে রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটক। এই সব রাজ্যগুলো ১০ হাজারের গণ্ডি পার করে এগিয়ে চলেছে। এর মধ্যে রাজস্থান (১৬ হাজার ২৯৬), পশ্চিমবঙ্গ (১৫ হাজার ৬৪৮), মধ্যপ্রদেশ (১২ হাজার ৫৯৬), হরিয়ানা (১২ হাজার ৪৬৩), তেলঙ্গানা (১১ হাজার ৩৬৪), অন্ধ্রপ্রদেশ (১০ হাজার ৮৮৪) ও কর্নাটকে (১০ হাজার ৫৬০) জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে বিহার (৮ হাজার ৪৭৩), জম্মু ও কাশ্মীর (৬ হাজার ৫৪৯), অসম (৬ হাজার ৩২১), ওড়িশা (৫ হাজার ৯৬২), পঞ্জাব (৪ হাজার ৭৬৯), কেরল (৩ হাজার ৭২৬)-এর মতো রাজ্যগুলো।
গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গেও বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। ৪৭৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। এ নিয়ে মমতার রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ৬৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে কলকাতায় আক্রান্ত পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে।
পাশাপাশি এই রোগে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৬০৬ জনে ঠেকেছে। আক্রান্ত ও মৃতের পাশাপাশি রাজ্যের সুস্থ হওয়ার সংখ্যাটাও উল্লেখযোগ্য। কোভিডে আক্রান্ত হয়েও রাজ্যের ১০ হাজার ১৯০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
বৈশাখী নিউজ/ জেপা