করোনায় গভীর সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্র: ফাউসি

আপডেট: June 27, 2020 |

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ফের খারাপের দিকে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ফেরার পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে টেক্সাস ও ফ্লোরিডার মতো অঙ্গরাজ্যগুলো। পরিস্থিতির ভয়াবহতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের করোনা মোকাবিলায় বিষয়ক টাস্কফোর্সের অন্যতম সদস্য অ্যান্থনি ফাউসি বলেছেন, কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে দেশ।

যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকদিন ধরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা উঠতির দিকে। শুক্রবার দেশটিতে ৪০ হাজারের বেশি শনাক্তের খবর এসেছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য তুলে ধরে বার্তা সংস্থা এএফপি ও বিসিসি জানিয়েছে, এদিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে ৪০ হাজার ১৭৩ জন মানুষের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।

বৈশ্বিক আক্রান্তের তালিকায় আগে থেকেই শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে মোট আক্রান্ত এরই মধ্যে ২৪ লাখ ৬৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মৃত্যু হয়েছে বিশ্বে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৫ হাজারের বেশি মানুষের।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে গত দুই মাসের মধ্যে শুক্রবার প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলনে আসে হোয়াইট হাউস টাস্কফোর্স। এ সময় ফাউসি বলেন, “এই মহামারির বিদায় করার একমাত্র পন্থা হলো সবাই মিলে এটাকে শেষ করা।”

এ সময় টেস্টের সংখ্যা আরও বাড়ানোর প্রতিও জোর দেওয়া হয় করোনা মোকাবিলায় গঠিত টাস্কফোর্স থেকে। এমনকি যাদের কোনো নতুনা নেই তাদেরও টেস্ট করাতে আহ্বান জানানো হয়।

এদিকে, করোনাভাইরাস নতুন করে ছড়িয়ে পড়ায় বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে টেক্সাস, ফ্লোরিডা ও অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যগুলো।

পরীক্ষার পরিধি বাড়ানোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শনাক্তের সংখ্যাও বাড়ছে। পরীক্ষার অনুপাতে কিছু কিছু অঙ্গরাজ্যে বেড়ে চলছে শনাক্তের হারও।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজি কন্ট্রোলের দাবি, দেশটিতে শনাক্তের সংখ্যার তুলনায় আক্রান্তের প্রকৃত চিত্র ১০ গুণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। তাদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে ২ কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনা মানার জন্য তরুণ আমেরিকানদের ধন্যবাদ দিয়ে টাস্কফোর্সের সমন্বয়ক ড. ডেবোরাহ বিরক্স বলেন, “আমরা আগে যেসব জায়গায় তাদের ঘরে থাকার জন্য বলতাম এখন তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য বলছি।”

টেস্ট নির্দেশনার ক্ষেত্রে নতুন পরিবর্তনের কথা তুলে ধরে ডেবোরাহ জানান, এর ফলে যাদের কোনো লক্ষণ নাই এবং সামান্য কিছু লক্ষণ আছে এমন আক্রান্তদেরও পাওয়া যাবে, যা আমরা আগে ধরতে পারিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে ফাউসি বলেন, “আপনারা দেখছেন যে, কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে আমরা কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। দেশের একটি অঞ্চলে যদি এমন অবস্থা চলে খুব সাধারণভাবে তা অন্যান্য অঞ্চলেও প্রভাব ফেলবে।”

যেসব এলাকায় নতুন করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে সেসব অঙ্গরাজ্যগুলো ‘আগেভাগে’ বিধিনিষেধ তুলে নিতে চেয়েছিল বলে মনে করেন ফাউসি। সেসব অঞ্চলে স্বাস্থ্য নির্দেশনাও খুব একটা মানা হয়নি বলে দাবি তার।

“মানুষ যখন অন্যান্য মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে সেক্ষেত্রে এমনি এমনিতেই আপনার মাধ্যমে যারা ঝুঁকিতে আছে তারাও আক্রান্ত হবে।”

“নিজেকে রক্ষায় আপনার একটা দায়িত্ব আছে। আপনার একটা সামাজিক দায়িত্বও রয়েছে। কারণ আমরা যদি এই মহামারি শেষ করতে চাই, সত্যিই শেষ করতে চাই…আমাদের এটা বুঝতে হবে যে, আমরা সবাই এই প্রক্রিয়ারই অংশ।”

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর