মাদারীপুরে চিকিৎসকের গাফিলতিতে এক অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু

আপডেট: October 10, 2020 |

মাদারীপুর শহরের ডিজিটাল অ্যাপোলো হাসপাতালে এক চিকিৎসকের গাফিলতিতে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য শহরের প্রভাবশালী একটি মহল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে প্রসূতির স্বজনরা হাসপাতালের সামনে দোষীদের বিচারের দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন। সদর থানা-পুলিশ মোতায়েন আছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের ডাসার থানার আটিপাড়া গ্রামের রুনা আক্তার (২২) নামে এক অন্তঃসত্ত্বার প্রসব বেদনা উঠলে শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ডিজিটাল অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফায়সাল কাবীর ও ডা. ফারজানা আফিয়া মেঘলা ওই প্রসূতিকে সিজার করে একটি পুত্র সন্তান ভূমিষ্ঠ করেন।

এ সময় প্রসূতির রক্ত প্রয়োজন বলে তার স্বামী রমজান মালকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতির অবস্থার অবনতি বলে নিজেরাই একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। পরে ফরিদপুর মেডিকেল কর্তব্যরত চিকিৎসক দেড় থেকে দুই ঘণ্টা আগে প্রসূতি মারা গেছে বলে জানান।

স্বজনরা রুনা আক্তারের মরদেহ নিয়ে পুনরায় ডিজিটাল অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন ডিজিটাল অ্যাপোলো হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মৃতদেহটি দাফন করতে বলেন।

কিন্তু বিষয়টি স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা পুলিশকে জানালে সন্ধ্যার দিকে সদর থানা-পুলিশ এসে বিষয়টি তদন্ত শুরু করে।

নিহতের স্বামী রমজান মাল বলেন, ‘আমাকে রক্ত আনার কথা বলে হাসপাতালে লোকজন নিজেরাই আমার স্ত্রীকে ফরিদপুর পাঠিয়ে দেয়। তারা কোনো কাগজপত্র দেয়নি। পরে ফরিদপুর গিয়ে জেনেছি, ডিজিটাল অ্যাপোলো হাসপাতালে সিজার করার সময়েই আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলছে। তারা আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য অনুরোধ করে। আমি টাকা চাই না, দোষীদের বিচার চাই।’

তিনি আরও জানান, সিজার করার সময় এনেস্থিশিয়া ডাক্তার ছিল না। ফলে আমার স্ত্রীকে ভুল চিকিৎসা করে মেরে ফেলেছে।’

তবে ডিজিটাল অ্যাপোলো হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির ভুল চিকিৎসার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘রোগীর প্রেশার বেশি থাকায় চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে গিয়ে রোগী মারা গেছে। আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না।’

টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রোগী গরিব হওয়ায় দাফন-কাফনের জন্য ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডাক্তারকে হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায়নি এবং তাদের মোবাইল ফোনে কল করে পাওয়া যায়নি।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান মিয়া জানান, নিহতের পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ দিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বৈশাখী নিউজ/ফারজানা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর