নাব্যতা সংকটে আজ বসেনি পদ্মা সেতুর ৩৫তম স্প্যান

পদ্মাসেতুর ৩৫তম স্প্যান বসাতে এবার দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নাব্যতা সংকট। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের সেতুর ৮ ও ৯ নম্বর পিলারের কাছে পর্যাপ্ত গভীরতা নেই। ভাসমান ক্রেনটি স্প্যানটিকে বহন করে পিলারের কাছে নিয়ে যেতে পারছে না। এর জন্য নির্দিষ্ট শিডিউল অনুযায়ী স্প্যান বসানোর কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। বর্তমানে সেখানে খনন করে পলি সরিয়ে গভীরতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

আজ শুক্রবার এই স্প্যান বসানোর দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু, পিলারের কাছে নাব্যতা সংকট নিরসন না হওয়ায় প্রাথমিকভাবে আগামীকাল শনিবার ও পরশু রোববার স্প্যান বসানোর দিন ঠিক করা হয়েছে।

তবে পর্যাপ্ত গভীরতা না ফিরলে আরও সময় লাগতে পরে বলে জানিয়েছে প্রকৌশলী সূত্র।

জানা গেছে, স্প্যান ‘টু-বি’ বসানো গেলে সেতুর ৫ হাজার ২৫০ মিটার দৃশ্যমান হবে। ৩৫তম স্প্যান বসানো হলে বাকি থাকবে ছয়টি স্প্যান। চলতি মাসে তিনটি স্প্যান বসানো হয়েছে। যেসব স্প্যান বসানো বাকি এগুলোর অবস্থান মাওয়া প্রান্তে। স্প্যানগুলো রাখা আছে মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে।

সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের বলেন, ‘কিছুদিন আগেও ৮ ও ৯ নম্বর পিলারের কাছে পানির গভীরতা ছিল ১৩০ ফুটের বেশি। কিন্তু, বর্তমানে পানি আছে প্রায় সাত ফুট। এমন পরিস্থিতি থাকলে স্প্যান বসানো সম্ভব হবে না। এর জন্য সেখানে খনন করে পলি অপসারণের কাজ চলছে। পলি সরিয়ে নাব্যতা বাড়ানোর পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে স্প্যান বসানোর জন্য এখনো তারিখ নির্ধারণ হয়নি।’

তিনি আরও জানান, মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ভাসমান ক্রেন ‘তিয়ান-ই’ অবস্থান করছে। এতে ফিটিং করা হচ্ছে ধূসর রঙয়ের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটিকে। রওয়ানা দেওয়ার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে।

স্প্যান বসানোর শিডিউল সম্পর্কে প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, আগামী ৪ নভেম্বর পিলার ২ ও ৩ নম্বরে ৩৬তম স্প্যান ‘১-বি’, ১১ নভেম্বর পিলার ৯ ও ১০ নম্বরে ৩৭তম স্প্যান ‘২-সি’, ১৬ নভেম্বর পিলার ১ ও ২ নম্বরে ৩৮তম স্প্যান ‘১-এ’, ২৩ নভেম্বর পিলার ১০ ও ১১ নম্বরে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’, ২ ডিসেম্বর পিলার ১১ ও ১২ নম্বরে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১০ ডিসেম্বর সবশেষ ৪১ নম্বর স্প্যান ‘২-এফ’ বসবে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের উপর।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা