বলিউডের বাদশাহ শাহরুখের জন্মদিন আজ

আপডেট: November 2, 2020 |

বলিউড বাদশাহ একজনই। তার তুলনা শুধু তিনি। সেই ১৯৮০ থেকে শুরু অভিনয়ের জগতে। এখনো তা চলছে বহাল তবিয়তে।জন্মদিন উপলক্ষে বলিউডের বিভিন্ন তারকা ও তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানিয়েছেন।
শাহরুখের বাড়ি মান্নাতের সামনে জন্মদিনে ভিড় করে অসংখ্য ভক্ত। বাড়ির বারান্দা থেকে হাত নাড়িয়ে ভক্তদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন এ হিরো। কিন্তু করোনার কারণে এবার তা হচ্ছে না। জন্মদিনে তেমন কোনো আয়োজন থাকছে না বলিউড বাদশার। এমন আভাসই পাওয়া গেছে তার টুইটার সূত্রে।

টুইটারে এক ভক্ত শাহরুখের এবারের জন্মদিনের আয়োজন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মান্নাতের সামনে কোনো প্রকার ভিড় করতে দেবে না পুলিশ।’ তাই এ পরিস্থিতিতে শাহরুখের বাড়ির সামনে ভিড় না করতে ভক্তদের অনুরোধ করেন তিনি।

১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর দিল্লির এক মুসলিম পরিবারে তার জন্ম। বাবা মীর তাজ মোহাম্মদ খান ও মা লতিফ ফাতিমা। শাহরুখের বাবা পাকিস্তানের পেশোয়ারের মানুষ এবং মা ভারতের হায়দ্রাবাদের। তিনি পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত নানির সঙ্গে প্রথমে ম্যাঙ্গালোর ও পরে ব্যাঙ্গালুরুতে থেকেছেন। শাহরুখের নানা ম্যাঙ্গালোর বন্দরের মুখ্য প্রকৌশলী ছিলেন। একটু বড় হওয়ার পরে শাহরুখের পরিবার দিল্লিতে চলে আসে। শাহরুখের যখন ১৫ বছর বয়স, তখনই তার বাবা মারা যান ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে। সেন্ট কলাম্বাস স্কুলে পড়াশোনা করেছেন তিনি। খেলাধুলাতে বেশ আগ্রহী ছিলেন। স্কুলে পড়ার সময় শাহরুখ হিন্দিতে তেমন একটা দক্ষ ছিলেন না। এরপর দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে অর্থনীতিতে বিএ পাস করেন। পরে এমএ পড়তে ভর্তি হলে সেটা আর শেষ করা হয়নি তার।

১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে বেশ কিছু টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত দিওয়ানা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। তিনি কর্মজীবনের শুরুর দিকে খল চরিত্রে ডর (১৯৯৩), বাজীগর (১৯৯৩), ও আঞ্জাম চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি লাভ করেন। এরপর তিনি অসংখ্য বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং খ্যাতি অর্জন করেন, তন্মধ্যে রয়েছে দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে (১৯৯৫), দিল তো পাগল হ্যায় (১৯৯৭), কুছ কুছ হোতা হ্যায় (১৯৯৮), মোহাব্বতে (২০০০), ও কভি খুশি কভি গম… (২০০১)। তিনি দেবদাস (২০০২)-এ মদ্যপ জমিদার পুত্র দেবদাস মুখার্জি, স্বদেশ (২০০৪)-এ নাসার বিজ্ঞানী, চাক দে! ইন্ডিয়া (২০০৭)-এ হকি কোচ ও মাই নেম ইজ খান (২০১০)-এ অ্যাসপারগারের লক্ষণে আক্রান্ত ব্যক্তি চরিত্রে অভিনয় করে সমাদৃত হন। তার সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্রসমূহ হল প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক চেন্নাই এক্সপ্রেস (২০১৩)উত্তেজনাপূর্ণ হাস্যরসাত্মক হ্যাপি নিউ ইয়ার (২০১৪), মারপিটধর্মী দিলওয়ালে (২০১৫) এবং অপরাধমূলক রইস (২০১৭)।

শাহরুখ খানের স্ত্রী গৌরীর বাবা সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। স্কুলে পড়ার সময় গৌরীর সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়। তখন থেকেই শুরু হয় শাহরুখ-গৌরীর প্রেমপর্ব। এরপর তিনি বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন ১৯৯১ সালের ২৫ অক্টোবর। শাহরুখ খানের প্রথম রোজগার ছিল ৫০ টাকা। গায়ক পঙ্কজ উদাসের একটা কনসার্টে কাজ করে সেই টাকা পেয়েছিলেন। কঠোর পরিশ্রম করতে পারেন শাহরুখ। মাত্র চার-পাঁচ ঘণ্টা ঘুমান তিনি। তার প্রিয় উক্তি হলো, ‘ঘুমানো মানে জীবন নষ্ট করা।’

শাহরুখ খান চলচ্চিত্র প্রযোজনা কোম্পানি রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্ট ও এর সহযোগী সংগঠনের সহ-চেয়ারম্যান এবং ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স ও ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগের দল ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের সহ-কর্ণধার। তাকে প্রায়ই টেলিভিশন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও স্টেজ শোতে পরিবেশনা করতে দেখা যায়। পণ্যের শুভেচ্ছাদূত ও শিল্পোদ্যোগের জন্য গণমাধ্যম তাকে প্রায়ই “ব্র্যান্ড এসআরকে” বলে উল্লেখ করে থাকে। শিশুদের শিক্ষায় সহায়তার জন্য ইউনেস্কো তাকে পিরামিড কন মার্নি পুরস্কার প্রদান করে এবং ভারতে নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষার্থে তার নেতৃস্থানীয় ভূমিকার জন্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাকে ২০১৮ সালে ক্রিস্টাল পুরস্কার প্রদান করে। তাকে প্রায়ই ভারতের সংস্কৃতির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় স্থান পেতে দেখা যায়। ২০০৮ সালে নিউজউইক তাকে বিশ্বের ৫০ ক্ষমতাধর ব্যক্তির তালিকায় স্থান দেয়।

 

বৈশাখী নিউজ/ বিসি

 

 

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর