রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের ব্যয়ের তারতম্য নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির অসন্তোষ

আপডেট: December 2, 2020 |

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের প্রাক্কলন, বাস্তবায়নের মেয়াদ ও ব্যয়ের হিসাবের মধ্যে তারতম্য নিয়ে ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করেছে অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বুধবার সংসদ ভবনে সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ অসন্তোষ প্রকাশ করে কমিটি।

এছাড়াও রেলের গত ও চলতি অর্থবছরের প্রকল্প এবং আগের বৈঠকের সুপারিশের বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।

একই সঙ্গে সভায় সড়ক পথে রেল সিগনালের স্থানগুলোতে ওভারপাস নির্মাণ করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিকল্পনা করতে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

কমিটি সদস্য চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন, এ বি তাজুল ইসলাম, ফজলে হোসেন বাদশা, আহসান আদেলুর রহমান, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ এবং খাদিজাতুল আনোয়ার সভায় অংশগ্রহণ করেন।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের নথি থেকে জানা গেছে, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের নিকট ঘুনধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্রাক নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদিত হয় ২০১০ সালের জুলাই মাসে। ২০১৬ সালের জুন মাসে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় বাড়িয়ে তা ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ধরা হয়েছে।

শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৮৫২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। পরে এটি বাড়িয়ে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ টাকা করা হয়েছে।

২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর খুলনা থেকে মংলা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়, যা ২০১৮ সালের ৩০ জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা থাকলেও ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।

শুরুতে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৭২১ কোটি ৩৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, যা পরে বাড়িয়ে ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ধরা হয়।

সভায় মন্ত্রণালয়কে ২০০৮ সাল হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত রেললাইন, সিট, সিগনাল ব্যবস্থা এবং প্লাটফর্মসহ রেলওয়েতে যাত্রীসেবার উন্নয়নের একটি সার্বিক প্রতিবেদন কমিটির নিকট দেয়ার সুপারিশ করা হয়।

সভায় ঢাকা থেকে মংলা পর্যন্ত রেললাইন তৈরির পরিকল্পনায় আন্ডার পাসগুলোতে হাই কিউব কন্টেইনার পরিবহনের সুবিধা কেনো রাখা হয়নি সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে কমিটির নিকট ব্যাখ্যা প্রদানের সুপারিশ করা হয়।

যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন এবং খরচ হ্রাস করতে; একটি বড় প্রকল্পকে পৃথক করে জমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাটকে একটি প্রকল্প এবং উন্নয়ন কাজগুলোর জন্য আরেকটি প্রকল্প গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

পরে গণমাধ্যমকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করে কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদ বলেন, “প্রকল্পের যে প্রাক্কলন করা হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা বাস্তবায়নের সময় ঠিক থাকে না। প্রাক্কলনে যে ব্যয় ধরা হয় দরপত্রে সেটার চেয়ে কম বা বেশি দেখা যায়। এটা হওয়া উচিত নয়।

‘তাছাড়া প্রকল্প শুরু হয় মেয়াদ শুরুর অনেক পরে। দেখা যায় ২০১০ সালের প্রকল্প শুরুই হয়েছে ২০১৮ সালে। এর ফলে প্রকল্পের খরচ অনেক বেড়ে যায়; জনস্বার্থ বিঘ্নিত হয়। এ জন্য আমরা বলেছি প্রাক্কলনের চেয়ে বেশি খরচ করা যাবে না; প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো যাবে না।’

বিষয়টি নজরদারির জন্য সংসদীয় কমিটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ (আইএমইডি) বিভাগের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তার নেতৃত্বে কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছে বলে তিনি জানান।

সভায় বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব, বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার প্রধানসহ রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর