আমরা আমাদের সম্পর্কগুলো আরেকটু ভালো অবস্থানে নিতে চাই : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট

আপডেট: December 25, 2020 |

ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ইঙ্গিত দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। তবে তিনি জানিয়েছেন ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরাইলের কার্যক্রম অগ্রহণযোগ্য। খবর মিডলইস্ট আই ও ডেইলি সাবাহর।ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক ‍উন্নয়ন প্রসঙ্গে এরদোগান বলেন, আমরা আমাদের সম্পর্কগুলো আরেকটু ভালো অবস্থানে নিতে চাই।

শুক্রবার ইস্তান্বুলে জুমআর নামাজের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এরদোগান বলেন, ইসরাইলের শীর্ষস্থানীয় লোকদের সঙ্গে আমাদের সমস্যা। তাদের সঙ্গে কোনো ইস্যু না থাকলে আমাদের সঙ্গে তাদের (ইসরাইলের) সম্পর্ক অন্যরকম হতে পারত।  ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরাইলের নীতিমালা আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য।

এই দুই দেশের মধ্যে ২০১৮ সালে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার হলেও দুই দেশের মাঝে শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। যদিও গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে তীব্র বিরোধ তৈরি হয়েছে। ফিলিস্তিনের কাছ থেকে জোরপূর্বক দখল করে পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি নির্মাণ, গাজা অবরোধ ও ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসা ইস্যুতে ইসরাইলি কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক।

এরদোগান বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের মূল সমস্যা আসলে শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি।  ফিলিস্তিন নীতিমালা আমাদের রেড লাইন।  আমাদের জন্য ইসরাইলের নির্মম ফিলিস্তিন নীতিমালা অগ্রহণযোগ্য।

 

বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। আজারবাইজান সম্প্রতি আর্মেনিয়ার কাছ থেকে নাগারনো-কারাবাখ অঞ্চলে যুদ্ধে জয় পেয়েছে। তুরস্ক ও ইসরাইলের ড্রোন ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে তাদের বিশেষ সহায়তা করেছে।

ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ওয়াল্লা জানিয়েছে, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ গত সপ্তাহে এরদোগানকে ফোন করে ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে কথা বলেন। আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেইহান বেইরামুভ ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাবি আশকেনাজির সঙ্গে একই বিষয়ে কথা বলেন। আজারবাইজান চায়, ইসরাইল ও তুরস্ক তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করুক।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের মাভি মারমারা সংকটের পর দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। তখন তুরস্কের একটি জাহাজ বহর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছাতে গেলে ইসরাইল সেখানে হামলা চালায়। এতে ১০ ত্রাণকর্মী নিহত হন।

এই হামলার পর তৎকালীন তুর্কি প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান বলেন, এই নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরাইলকে শাস্তি পেতে হবে।

পরে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তুরস্কের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। একই সঙ্গে ওই ঘটনার জন্য তিনি ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেন। পরে তুরস্ক-ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়।

২০১৩ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দেশ দুটির প্রধানমন্ত্রীরা কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে রাজি হন।

২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নিলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ফিলিস্তিনিরা। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বিক্ষোভরত ৬২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরাইলি বাহিনী। ওই হামলার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত ইতান নাভেহকে বহিষ্কার করে তুরস্ক। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ইসরাইলও তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয়।

বৈশাখী নিউজফাজা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর