বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে সশস্ত্র বিক্ষোভ ট্রাম্পপন্থীদের

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠান যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। শপথ অনুষ্ঠানের আগে ট্রাম্পপন্থীদের সশস্ত্র বিক্ষোভের যে আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা অনেকটাই সত্যি হয়েছে। গত রবিবার দেশটির বিভিন্ন স্টেট হাউসের (রাজ্য আইনসভা) সামনে বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভ করেছে ট্রাম্পপন্থীরা। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকেই ছিল সশস্ত্র।

এদিকে আরেকটি আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, শপথ অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যই হামলা চালিয়ে বসেন কি না, সে বিষয়টি নিয়েও দুশ্চিন্তা রয়েছে। এ জন্য শপথ অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার দায়িত্বে যাঁরা থাকবেন, তাঁদের অতীত ঘেঁটে দেখতে এফবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আগামীকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন জো বাইডেন। তাঁর শপথের দিনে কিংবা আগে ট্রাম্পপন্থীরা দেশজুড়ে সশস্ত্র বিক্ষোভ করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছিল এফবিআই। আর সেই বিক্ষোভ ১৭ জানুয়ারি হতে পারে বলেও জানিয়েছিল তারা।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত রবিবার বিভিন্ন স্টেট হাউস বা রাজ্য আইনসভার সামনে বিক্ষোভকারীদের ছোট ছোট দল দেখা গেছে, যাদের কেউ কেউ ছিল সশস্ত্র। টেক্সাস, ওরেগন, মিশিগান, ওহাইওসহ আরো কিছু রাজ্যের স্থানীয় কংগ্রেস ভবনের সামনেও সশস্ত্র বিক্ষোভ হয়েছে।

এর আগে গত ৬ জানুয়ারি কংগ্রেস ভবনে হামলা চালায় ট্রাম্পপন্থীরা। তাতে পুলিশের এক কর্মকর্তাসহ নিহত হয় পাঁচজন। মূলত ওই ঘটনা এবং এফবিআইয়ের সতর্কবার্তার পর সব অঙ্গরাজ্যেই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। বিভিন্ন শহরে বসানো হয় ব্যারিকেড। মোতায়েন করা হয় ন্যাশনাল গার্ডের হাজার হাজার সদস্য। বন্ধ করে দেওয়া হয় উগ্র ট্রাম্পপন্থীদের অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপ।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওহাইও অঙ্গরাজ্যের কলাম্বাসে স্টেট হাউসের সামনে প্রায় ২৫ বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছিল। সবার হাতেই আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। মিশিগানে যারা বিক্ষোভ করেছে, তাদের কয়েকজনের হাতে ছিল রাইফেল। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক বিক্ষোভকারী বলে, ‘আমি সহিংসতা দেখাতে আসিনি এবং আমার মনে হয় না কেউ সহিংসতা দেখাতে চায়।’

বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠান হবে ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে। ওয়াশিংটন শহরের নিরাপত্তায় এরই মধ্যে ২৫ হাজারের বেশি ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এই ২৫ হাজার সদস্যের মধ্যে থেকে কেউ সহিংসতা ঘটান কি না, তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সামরিক কর্মকর্তারা। গত রবিবার বার্তা সংস্থা এপিকে আর্মি সেক্রেটারি রায়ান ম্যাককার্থি বলেন, ‘বাহিনীর ভেতরের কোনো সদস্যকে হুমকি মনে হয় কি না, সে বিষয়ে কমান্ডারদের সতর্ক করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে খুবই সতর্ক আছি। শপথ অনুষ্ঠানের দায়িত্ব পাওয়া কর্মীদের জীবনবৃত্তান্ত খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে।’ বাহিনীর ভেতরে সন্দেহভাজন কেউ থাকলে তাঁকে কিভাবে শনাক্ত করা হবে, সে বিষয়েও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান রায়ান।

এদিকে বিদায়ের আগে শতাধিক সাধারণ ক্ষমার আদেশে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদের মধ্যে হত্যা মামলা থেকে শুরু করে ধর্ষণ মামলার আসামিও আছে। যারা ক্ষমা পেতে যাচ্ছে, তাদের বেশির ভাগই শ্বেতাঙ্গ। সিএনএন জানায়, গত রবিবার হোয়াইট হাউসের বিশেষ এক সভায় সাধারণ ক্ষমা পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

বৈশাখী নিউজজেপা