যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র শীত ও তুষারঝড়ে নিহত বেড়ে ৩১

যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র শীত ও তুষার ঝড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া লাখ লাখ অধিবাসী বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।
টেক্সাস, কুইজিয়ানা, কেন্টাকি, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং মিসৌরিতে তুষারঝড়ের প্রভাবে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কয়েকজন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এ ছাড়া জেনারেটর ও গাড়ির ভেতর কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়াতেও মৃত্যু হয়েছে কয়েকজনের।
টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন লাখো মানুষ। সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) টেক্সাসের বড় একটি অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দেখা দিয়েছে খাবার ও পানির সংকট। এ ছাড়া ব্যাহত হচ্ছে টিকাদান কর্মসূচি। বরফে ঢেকে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের চার ভাগের তিন ভাগ অঞ্চল।
নতুন আরেকটি তুষারঝড়ের কারণে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে চলতি সপ্তাহেও তুষারপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। এ ছাড়া কোনো কোনো জায়গায় ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত বরফ পড়তে পারে।
দেশটির টেক্সাস অঙ্গরাজ্য সবচেয়ে বেশি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। সেখানকার অনেক এলাকায় ‘ব্ল্যাকআউট’ চলছে। বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে যাওয়ায় এই ঘাটতি তৈরি হয়েছে। অঙ্গরাজ্যটির লাখ লাখ অধিবাসী তীব্র শীতের মধ্যে বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবিলা করছে, যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, ঝড়ের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা টেক্সাসের ওপর দিয়ে পার হয়ে গেছে। তবে ১০ কোটি মানুষকে এখনো আবহাওয়া সতর্কতার মধ্যে রাখা হয়েছে।
এনডব্লিউএস আরও জানিয়েছে, ঐতিহাসিকভাবে নিম্ন তাপমাত্রা কয়েক দিন ধরে থাকার কথা। যুক্তরাষ্ট্রের ৭০ শতাংশের বেশি অঞ্চল বর্তমানে তুষারে ঢেকে গেছে।
এই শীতল ঝড় মেক্সিকোর মধ্য ও উত্তরাঞ্চলেও পৌঁছেছে। সেখানকার লাখ লাখ মানুষ কয়েক দিন ধরে অনিয়মিতভাবে বিদ্যুতের ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে যেসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে রয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা ও কার্বন মনোক্সাইড সংক্রান্ত বিষক্রিয়া। তীব্র ঠাণ্ডার মধ্যে গরম থাকার জন্য গাড়ি ও বাসার জেনারেটর চালু রাখার ফলে এ বিষক্রিয়ার ঘটনাগুলো ঘটেছে। এ বছর ঠাণ্ডা আবহাওয়ার দিনগুলোতে অন্তত ৩শটি কার্বন মনোক্সাইড সংক্রান্ত দুর্ঘটনা ঘটেছে।
টেক্সাসের ইলেক্ট্রিক রিলায়াবিলিটি কাউন্সিল জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে ঘাটতি তৈরির মাধ্যমে বিদ্যুতের সরবরাহ দেয়া হবে। অঙ্গরাজ্যের ২০ লাখের মতো মানুষ এখনো বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। বুধবার গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানান, টেক্সাসের ১২ লাখ মানুষকে আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে, এখনো অনেককে দেয়ার কাজ চলছে।
আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোনো নিজস্ব প্রাকৃতিক গ্যাস টেক্সাসের বাইরে রফতানীতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন গভর্নর অ্যাবট। বিদ্যুতের এ ব্যাপক ঘাটতির ফলে সেখানকার কিছু কর্মকর্তা ও অধিবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
টেক্সাসের বাড়িঘর সাধারণৎ ঠাণ্ডা আবহাওয়া প্রতিরোধের উপযোগী করে তৈরি করা হয় না। তাই বাসার উষ্ণায়ন সিস্টেম যদি বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা দ্রুত কমে যায়। গত কয়েক দিনে সরবরাহের পানি বরফ হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানকার অনেক বাসাবাড়ির পানির পাইপ ফেটে গেছে। অনেক অধিবাসী পাইপে কম্বল পেঁচিয়ে গরম রাখার চেষ্টা করলেও তা কাজে আসছে না।
বৈশাখী নিউজ/ জেপা