রূপগঞ্জে আগুন: শ্রমিক-পুলিশ ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া

আপডেট: July 9, 2021 |

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুডস লিমিটেড কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা দ্বিতীয়বারের মতো ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে আবারও পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।

এদিকে বিক্ষুব্ধরা কারখানার গেট সংলগ্ন আনসার ক্যাম্প থেকে চারটি শটগান ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করে।

এ ঘটনায় ব্যর্থ হয়ে শ্রমিকরা শটগান পাশের খালে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় তিনটি শটগান পানি থেকে উদ্ধার করা গেলেও একটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এ ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহে কারখানায় যাওয়া-আসার সময় শ্রমিকদের হামলার শিকার হন কয়েকজন সংবাদকর্মী। অনেক শ্রমিকের সন্ধান মিলছে না বলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে কারখানার মেইন গেটের বাইরে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে এসব তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে নিখোঁজের স্বজনরা জানান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও জনতা মিলের গেটের সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা আনসার, পুলিশ ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

এ ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহে আসা কয়েকজন সাংবাদিক শ্রমিকদের মারধরের শিকার হন। এ সময় শ্রমিকরা তাদের মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ হেলমেট ছিনিয়ে নেয়। বর্তমানে যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হলেও পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এদিকে শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. জাইদুল আলম ও রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ নুসরাত জাহানসহ প্রশাসনের অনেকে।

ঘটনাস্থলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাইন বিল্লাহ দুঃখ প্রকাশ করে শ্রমিকদের শান্ত্বনা দিয়ে বলেন, নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তীতে এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনে আরও সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট কাজ করলেও পরে পর্যায়ক্রমে তাদের সঙ্গে যোগদান করে আরও ৪/৫ ইউনিট। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শাহ আলম।

উল্লেখ্য, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত স্বপ্না আক্তার (৪৫), মীনা আক্তার (৪১) ও মোরসালিনসহ (২৮) তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনো ৭০-৮০ জন শ্রমিক ওই ভবনের ভেতরে রয়েছে বলে জানান কারখানার শ্রমিক ও নিখোঁজের স্বজনরা।

বৈশাখী নিউজ/ বিসি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর