গোল্ডেন গ্লাভস জিতলেন পিকফোর্ড

আপডেট: July 12, 2021 |
print news

ডেনমার্ককে হারিয়ে ৫৫ বছর পর ইংল্যান্ড কোন আসরের ফাইনালে উঠেছিল। ওই ম্যাচেই প্রায় অর্ধশতাব্দী পুরনো এক রেকর্ড ভেঙেছিলেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। থ্রি লায়ন কিংবদন্তী গর্ডন ব্যাঙ্কসের ৭২০ মিনিট কোনো গোল না খাওয়ার রেকর্ড টপকে ৭২৬ মিনিটের নতুন রেকর্ড গড়েছেন ২৭ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক।

অবশ্য ফাইনালেও সেই ধারা অব্যহত রাখতে শুরু করেছিলেন পিকফোর্ড। প্রথমার্ধে কোন গোল করতে পারেনি ইতালি। তবে, ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেই পিকফোর্ডকে ফাকি দিয়ে ঠিকই জাল খুঁজে নেয় আজ্জুরিরা।

লরেন্সো ইনসিনিয়ের কর্নার থেকে পাওয়া বল ভেরাত্তি হেড দিলেও জালে জড়ায়নি। বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় পিকফোর্ডের দারুণ সেভ। কিন্তু ফিরতি বল পেয়ে আর সময় নেননি লিওনার্দো বোনুচ্চি। গোলের কয়েক ফুট সামনে থেকে সবচেয়ে বেশি বয়সীর ফাইনালে গোল দেওয়াও দেখে ফেলল ইতালি। ৩৪ বছর বয়সী বোনুচ্চির চেয়ে বেশি বয়সে কেউ ইউরোর ফাইনালে গোল করেননি।

ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হারলেও এদিনও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন জর্ডান পিকফোর্ড। টাইব্রেকারে রুখে দিয়েছিলেন একটি শটও। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ইংল্যান্ড মাত্র দুটি গোল হজম করার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান পিকফোর্ডেরই। আর তাই তো টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার উঠেছে তার হাতেই। ইউরো ২০২০ এর গোল্ডেন গ্লাভস জিতেছেন জর্ডান পিকফোর্ড।

গোটা টুর্নামেন্টের ৭টি ম্যাচের মধ্যে ৫টিতেই ইংলিশদের ক্লিনশিট এনে দিয়েছেন পিকফোর্ড। তারপরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্লিনশিট বেলজিয়ামের থিবো কোর্তোয়া এবং ইতালির জিয়ানলুইগি ডনারুমার তিনটি করে।
এর আগে, থ্রি লায়নদের ফাইনালে ওঠার পেছনে অবদান রাখার অন্যতম একজন এই পিকফোর্ড। ইউরোতে সেমিফাইনাল পর্যন্ত কোন গোল হজম করেনি ইংল্যান্ড। আর প্রতিটি ম্যাচে সাউথগেটের দলের পোস্ট সামলেছেন এই পিকফোর্ড।

১৯৬৬ বিশ্বকাপেও সেমিফাইনাল পর্যন্ত কোনো গোল খান নি গর্ডন ব্যাঙ্কস। মঞ্চ আলাদা হলেও সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেলেন পিকফোর্ড। ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক হয়ে গোল না খাওয়ার নতুন রেকর্ড এখন ৭২৬ মিনিটে। সেমিফাইনালের ৩০ মিনিটে ডেনমার্কের ডামসগার্ডের অসাধারণ এক ফ্রি কিকে গোল হওয়ায়, তার নতুন রেকর্ডটা থেমে যায় ৭২৬ মিনিটে।

অথচ এই পিকফোর্ডই কি না পেয়েছিলেন প্রাণনাশের হুমকি। ইপিএলে লিভারপুল-এভারটন দ্বৈরথ কারো অজানা নয়। গত বছর ইপিএলের ম্যাচে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী লিভারপুলের ডিফেন্ডার ভার্জিল ভ্যান ডাইককে এক চ্যালেঞ্জ করে বসেন এভারটনের এই গোলরক্ষক। যাতে বড় ইনজুরিতে পড়েন ভ্যান ডাইক। করাতে হয় অস্ত্রোপচার। ছিটকে যান পুরো মৌসুমের জন্য। লিভারপুলের এক ভক্ত পিকফোর্ডকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বসেন।

অবশ্য সেখানেই দমে যান নি পিকফোর্ড। নিজের কাজটা ঠিকঠাক করে গেছেন। প্রাণনাশের হুমকিতে বিচলিত হলে নিশ্চয়ই পোস্ট সামলানোর মত কঠিন কাজ করা সম্ভব না।

যদিও ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে তার ক্যারিয়ার বেশি দিনের না। থ্রি লায়নদের হয়ে অভিষেক হয় ২০১৭ সালে। এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৩৭ ম্যাচ। এই চার বছরের ছোট্ট ক্যারিয়ারেই ভেঙ্গে দিলেন ৫৫ বছর টিকে থাকা এক রেকর্ড।

পিকফোর্ড কখনোই বিশ্বসেরা গোলরক্ষকদের কাতারে ছিলেন না। কিন্তু তারপরও ইউরোপের সেরাদের পেছনে ফেলে জিতে নিয়েছেন ইউরোর গোল্ডেন গ্লাভ। তার সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে ওঠার এই যাত্রাটা অনুপ্রেরণা দিবে যে কাউকেই।

বৈশাখী নিউজ/ ইডি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর