মশার বিস্তার রোধে সচেতন না হলে জেল: এলজিআরডি মন্ত্রী

আপডেট: July 12, 2021 |

মহামারী করোনার মধ্যে ডেঙ্গু যেন মাথাব্যথার কারণ হয়ে না দাঁড়ায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

সোমবার (১২ জুলাই) দুপুরে স্থানীয় সরকার বিভাগের আয়োজনে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, দফতর বা সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার দশম আন্তঃমন্ত্রণালয় অনলাইন সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনে মশা মারলে দক্ষিণ সিটি হবে না অথবা দক্ষিণে মারলে উত্তরে হবে না এমনটি ভাবা উচিত নয়। প্রতিষ্ঠান বা বাড়ি-ঘর যারই হোক, আমি-আপনি যেই হই না কেন আমরা সবাই এই শহর ও দেশের মানুষ। মশা নিধনে সবাইকে অর্পিত নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। সমন্বিত উদ্যোগে কাজ না করলে সুফল আসবে না।

জেল-জরিমানার পরও ওই সব বাসা-বাড়ি বা ভবনে পুনরায় মশার লার্ভা পাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে এমন তথ্য জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না করা গুরুতর অপরাধ। আর এই অপরাধের সঙ্গে কেউ সম্পৃক্ত হলে তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে।

ইচ্ছাকৃতভাবে এডিস মশার প্রজননের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে দুই সিটি করপোরেশনে চিরুনি অভিযানের অংশ হিসেবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, নির্মাণাধীন ভবনগুলোর বেজমেন্ট এবং ছাদের বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে থাকে। আর এখানেই এডিস মশার প্রজনন বেশি হয়। যারা ভবন নির্মাণ করছেন অথবা নির্মাণকাজ বন্ধ রেখেছেন বা যাদের পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে তাদেরকে জমানো পানিতে লার্ভিসাইড অথবা সামান্য পরিমাণ কেরোসিন ঢেলে দেয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।

ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এডিস মশার বিস্তার বা প্রজননের সকল ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এডিস, অ্যানোফিলিস বা কিউলিক্স যে মশাই হোক না কেন এগুলো নিধনের জন্য কী করতে হবে তা সবারই জানা।’ করোনার মধ্যে যেন ডেঙ্গু মাথা ব্যথার কারণ না হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন তিনি।

প্রত্যেক ওয়ার্ডকে দশটি সাব-জোনে ভাগ করে কাউন্সিলরের নেতৃত্বে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে গঠিত কমিটিকে স্থায়ী রূপ দেয়ার পরামর্শ দিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ত্রাণ বিতরণ, মশা নিধন, জলাবদ্ধতা নিরসন এবং দুর্যোগ-দুর্বিপাকসহ যেকোনো সমস্যার দ্রুত সমাধানে এই কমিটিকে কাজে লাগানো সম্ভব।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা বা ঘাস কাটা বছরভিত্তিক অথবা কোয়ার্টালি না করে নিয়মিত করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রেলওয়ে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এবং সিভিল এভিয়েশনসহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধিক্ষেত্রে মশার বিস্তার রোধে নিজ উদ্যোগে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলার কোনো সুযোগ নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ। তার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন এবং মিশন বাস্তবায়নের কাজ করে যাচ্ছি। এখানে কে কোন মন্ত্রণালয়ের, কে কোন পদে আছে সেটা বড় বিষয় নয়; আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা।

সভায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, গাজীপুর, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, দফতর বা সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর