সাধারণ মানুষের মৃত্যু নিয়ে মুখ খুলল তালিবান

আপডেট: August 13, 2021 |

যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র আফগানিস্তানে ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন তালিবান। ক্ষমতার লড়াইয়ে নিজেদের অগ্রযাত্রা ক্রমেই সমৃদ্ধ করছে দলটি। গেল ছয় দিনে মোট ৯ প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিতে সমর্থ হয় সংগঠনটির যোদ্ধারা। এবার সরকারি বাহিনীকে হটিয়ে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে নিজেদের পতাকা উড়িয়েছে তারা।

আগামী ৯০ দিনের মধ্যে সশস্ত্র দলটি কাবুল তথা গোটা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে বলে আশঙ্কা মার্কিন গোয়েন্দাদের। যদিও তালিবানের এমন উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে দলটির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকেও হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১১ আগস্ট) এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন দলটির নেতারা।

বিবৃতিতে বেসামরিক লোকজনকে হত্যার অভিযোগ জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে তালিবান। একই সঙ্গে এ ধরনের নির্মম হত্যাকাণ্ডের জন্য সরকারি বাহিনী ও বিদেশি সৈন্যদের দায়ী করেছে সংগঠনটি। এমনকি বিষয়টি নিয়ে স্বাধীন তদন্তের দাবিও জানিয়েছে তারা। এমনটা হলে তদন্তে নিজেদের পক্ষ থেকেও সহায়তা প্রদানের অঙ্গীকার করেছে দলটি।

তালিবান বাহিনীর মুখপাত্র সুহাইল শাহীন বলেছেন, আমাদের দল কোথাও কোনো বেসামরিক নাগরিক বা তাদের বাড়িঘরকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেনি। বরং অপারেশনগুলো সব সময়ই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করা হয়েছে। আমরা আফগান নাগরিকদের এটা নিশ্চিত করতে চাই যে, তালিবানের দিক থেকে আপনাদের কোনো ঘরবাড়ি কিংবা পরিবার কখনও হুমকির সম্মুখীন হবে না।

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানায়, আফগানিস্তানে গত মাসে বিভিন্ন হামলায় এক হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেডক্রস জানিয়েছে, গত ১ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে আহত চার হাজার ৪২ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। মূলত ১৫টি চিকিৎসা কেন্দ্রে তারা এই চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও রেডক্রসের এই পরিসংখ্যানের পর বুধবার বেসামরিক জনগণকে হত্যার সঙ্গে যুক্ত না থাকার দাবি করে তালিবান। যদিও মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস আফগানিস্তানে বিদ্যমান সহিংসতার জন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকেই দায়ী করেছেন। তার মতে, আপনি যেদিকেই তাকাবেন সেখানেই তাদের (তালিবান) সহিংসতা ও নৃশংসতা দেখতে পাবেন। ভিডিয়ো ফুটেজে নিজের চোখেই সব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

এ দিকে তালিবান যোদ্ধারা সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে আফগান প্রশাসন। সশস্ত্র দলটির অগ্রযাত্রা দ্রুত অব্যাহত থাকার প্রেক্ষাপটে আফগান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়ালি মোহাম্মদ আহমাদজাইকে এরই মধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এমনকি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক কমান্ডারদের প্রতি সরকারকে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কাবুলকেই তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে বলার পরপরই আঞ্চলিক কমান্ডারদের শরণাপন্ন হন তিনি।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর