করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুও বাড়ছে

আপডেট: June 29, 2022 |
print news

এক দিনে ৪৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি ছিল।

জনস্বাস্থ্যবিদগণ বলছেন, দুটি রোগের জন্যই মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

এখন অনেকেই জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকেই হঠাৎ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন। খবর দিয়ে জানাচ্ছেন, জ্বর জ্বর ভাব, তাই ঝুঁকি নিয়ে অফিসে আসতে চান না। অনেকে বলছেন, জ্বর হওয়ার পর করোনা পরীক্ষা করতে দিয়েছেন, ফলাফল পাওয়ার পর অফিসে আসার সিদ্ধান্ত নেবেন। কেউ বলছেন, পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। ঝুঁকি না নিয়ে কেউ কেউ একই সঙ্গে ডেঙ্গু ও করোনার পরীক্ষা করাচ্ছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায়, অর্থাৎ ২৭ জুন সকাল ৮টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৪৭ জন নতুন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৪৬ জন ঢাকা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে, বাকি ১ জন ঢাকার বাইরে।

এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৩৫২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর চলতি মাসের ২৮ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন একজন। যদি থেমে থেমে বৃষ্টি হয়, অর্থাৎ দু-তিন দিন বৃষ্টি, তারপর দু-তিন রোদ থাকলে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলে জনস্বাস্থ্যবিদেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

ডেঙ্গুর প্রকোপটা এমন সময় বাড়ছে, যখন করোনা সংক্রমণও বাড়তির দিকে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৮৭ জন করোনায় আক্রান্তের তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এই সময় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন করোনায় মৃত্যু হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এক সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে ৩০০ শতাংশ।

জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, করোনার অমিক্রন ধরনেই (ভেরিয়েন্ট) মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। রোগের তীব্রতা তুলনামূলকভাবে কম।

আক্রান্ত অধিকাংশ মানুষ বাড়িতেই থাকছেন। এবারের উপসর্গ নিয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘আক্রান্ত ব্যক্তিদের এবার কাশি বেশি দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া অবসাদ থাকছে ২০ থেকে ২৫ দিন। ’ তিনি আরও বলেন, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলো প্রস্তুত আছে। অক্সিজেনের নিশ্চিত সরবরাহ আছে।

তবে ডেঙ্গু ও করোনা সংক্রমণের এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার বাড়তি কোনো পদক্ষেপ স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নিতে দেখা যাচ্ছে না। করোনা ও ডেঙ্গু সংক্রামক ব্যাধি। সামনে পবিত্র ঈদুল আজহা। হাটবাজারে, রাস্তায় মানুষের ভিড় বাড়বে। এই সময় দুটি রোগই আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু ও করোনা পরীক্ষার জন্য সাধারণ মানুষ কোথায় যাবেন, এমন নির্দেশনা সরকারের তরফে থাকতে হবে।

একইভাবে ডেঙ্গু ও করোনায় মানুষ যেন আক্রান্ত না হন, সে ব্যাপারেও জোর প্রচারণা চালাতে হবে। পাশাপাশি রোগীর চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে হবে।

বৈশাখী নিউজ/ ইডি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর