হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া , দোনেৎস্কের বাসিন্দাদের পালাতে বললেন গভর্নর

ইউক্রেনের দোনেৎস্কে হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় শিশুসহ বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। হামলা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে অঞ্চলটির অধিবাসীদের জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যেতে বলেছেন গভর্নর।
মঙ্গলবার রুশ বাহিনীর বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহতের দাবি করেছে কিয়েভ। তবে পূর্বাঞ্চলের ঠিক কোন অঞ্চলে রুশ বাহিনীকে মোকাবিলা করা হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, এদিন দোনেৎস্কে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ বাহিনী। হামলায় বেশ কয়েকটি আবাসিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান অঞ্চলটির গভর্নর। একইসঙ্গে সেখানে থাকা সাড়ে তিন লাখ মানুষকে জীবন বাঁচাতে দ্রুত নিরাপদে চলে যেতে বলেছেন তিনি।
রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে ফের ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, ‘রুশ বাহিনী কোনো কিছুই মানছে না। তারা সারা দেশে হামলা চালাচ্ছে। নিরীহ মানুষ তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। আমাদের সেনারা তাদের মোকাবিলা করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এটা আমাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। মিত্রদেরও এগিয়ে আসতে হবে।’
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। অভিযানের প্রথম লক্ষ্য ছিল, রাজধানী কিয়েভের দখল। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পর সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে মস্কো। কিয়েভ থেকে সেনা সরিয়ে শিল্পোন্নত দোনবাস অঞ্চল দখলে মনযোগ দেয়।
প্রধানত দুটি প্রদেশ লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক মিলে গঠিত হয়েছে দোনবাস। ২০১৪ সালে এ দুই অঞ্চলে পিপলস রিপাবলিক অব লুহানস্ক ও পিপলস রিপাবলিক অব দোনেৎস্ক নামে স্বাধীন প্রজাতন্ত্রের ঘোষণা দেয় রুশপন্থি স্বাধীনতাকামীরা। মূলত তখন থেকেই এ অঞ্চলে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই চলছে।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের দুদিন আগে এ দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রায় পাঁচ মাস পর এর গুরুত্বপূর্ণ অংশের দখলকে বড় বিজয় হিসেবে দেখছে মস্কো। রুশ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, পুরো লুহানস্ক অঞ্চল মুক্ত করা হয়েছে। এদিন লুহানস্কের সবশেষ ঘাটি লিসিচানস্ক থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় ইউক্রেন।
সোমবার (৪ জুলাই) লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নর সের্হি হাইদাই বলেন, লুহানস্কের সর্বশেষ শহর দখলে নেয়ার পর এবার দোনেৎস্ক অঞ্চলের সবটুকু দখলে নজর দিয়েছে রুশ সেনারা। তবে লুহানস্কের পতনকে পরাজয় বলতে নারাজ হাইদাই।