বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করল রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

আপডেট: December 19, 2022 |
print news

বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে। পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে বহুল আলোচিত-সমালোচিত বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ শনিবার দিবাগত রাত থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া শুরু করেছে।

২০২৩ সালের জুনে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে আরও ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে জানা গেছে।

রামপাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুফল রামপাল ও বাগেরহাটবাসী পেতে শুরু করেছে। এই কেন্দ্রের ফলে এলাকার মানুষ নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবে। পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি ও বিপুল পরিমাণে বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান হবে।’

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ-ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, প্রথম ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৬০ মেগাওয়াট গোপালগঞ্জের আমিন বাজার হয়ে ঢাকার জাতীয় গ্রিডে এবং ২০০ মেগাওয়াট খুলনা-বাগেরহাটে সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া দ্বিতীয় ইউনিটের ৭৯.৩৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ একরাম উল্লাহ বলেন, আমরা বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছি। পরিবেশগত দিক বিবেচনা করে সব ধরনের কারিগরি কাজ করা হয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপশি এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।

জানা গেছে, ২০১০ সালে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়।

এই কোম্পানির অধীনে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় ১ হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়।

২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় ৯ বছর বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে গেল প্রতিষ্ঠানটি।

এর আগে এ বছরের ১১ জুলাই বয়লার স্টিম ব্লোয়িং স্থাপন করা হয়। এক মাস পরে ১৪ আগস্ট টারবাইনে স্টিম ডাম্পিং এবং এক দিন পরে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর