অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ : দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার কাজ চলছে

আপডেট: March 5, 2023 |
Boishakhinews24.net 63
print news

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা দুই থেকে এখন পর্যন্ত ৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত রয়েছে অন্তত ২৬ জন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৮ জন।

রোববার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার কার্যক্রম। এরআগে শনিবার বিকেল চারটার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপো থেকে আধা কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সীমা অক্সিজেন অক্সিকো নামক একটি অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় আশপাশের অন্তত কয়েক কিলোমিটার এলাকা ভূকম্পনের মত প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। আধা কিলোমিটার দূরের অনেক বাড়িঘরের দরজা এবং জানালার কাঁচ ভেঙ্গে পড়ে। এছাড়া বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনায় পাশের তিন কারখানা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আশেপাশের ৩০টি ভবন।

নিহত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট বাংলাবাজার এলাকার মৃত আবুল বাশারের ছেলে মো. ফরিদ (৩২), কদমরসুল এলাকার মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে শামসুল আলম (৬৫), নেত্রকোণার কমলাকান্দা উপজেলার ছোট মনগড়া গ্রামের মিকি রোঙ্গিলখরেকের ছেলে রতন লখরেক (৪৫), নোয়াখালীর মাইজদী থানার অলিপুর গ্রামের মকবুল আহমেদের ছেলে আবদুল কাদের (৬০) ও লক্ষ্মীপুরের কমলনগর এলাকার মফিজল হকের ছেলে সালাহ উদ্দিন (৩৫)।

আহতদের চমেকের ক্যাজুলয়াটি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহত মো. নূর হোসেন (৩০), মো. আরাফাত (২২), মোতালেব (৫২), ফেনসি (৩০), জসিম উদ্দিন (৪৫), নারায়ণ (৬০), মো. ফোরকান দাদা (৩৫), শাহরিয়ার (২৬), মো. জাহিদ হাসান (২৬), শামসুল আলমসহ (৫০)। এছাড়া মোট ১৮ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণে প্ল্যান্টের অভ্যন্তরে আগুন ধরে যায়। কুণ্ডলী পাকিয়ে ধোঁয়া উড়তে থাকে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নয়টি ইউনিট মাঠে নামে। দুই ঘণ্টার চেষ্টায় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে ফায়ার সার্ভিস এবং সাড়ে আটটার দিকে রাতের মত উদ্ধার কাজে বিরতি দেন উদ্ধারকর্মীরা।

সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম দুলাল জানান, কারখানার বিধ্বস্ত শেডের ভেতরে প্ল্যান্টের চারপাশের ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়া হতাহতদের উদ্ধার কাজ চলছে। তবে কী কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার আগে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে না।

এদিকে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

কদম রসুল এলাকার বাসিন্দা মোরশেদ হাসান বলেন, বিএম ডিপোর আতঙ্ক কাটতে না কাটতে আরও একটি দুর্ঘটনা ঘটলো। এখনো রাত হলেই বিএম ডিপোর বিস্ফোরণের আতঙ্ক আমাদের গ্রাস করে। আজ আরও একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো। আমরা এলাকাবাসীরা এটা নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত।

সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহমেদ বলেন, পরপর দুটি বড় ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনায় এলাকাবাসীর আতঙ্কিত। এ ধরনের বিস্ফোরণ প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে আরো তৎপর ও কারখানাগুলোকে আরো সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

২০২২ সালের ৪ জুন রাতে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৫০ জন নিহত হন। আহত হন প্রায় ২০০ লোক।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর