মোহনপুরে আ’লীগ প্রার্থীর মিছিলে বিদ্রোহীর হামলা!

আপডেট: March 15, 2023 |
print news

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আব্দুল হাই প্রধান এবং তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা ও নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা প্রদান করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী কাজী মিজানুর রহমান। এই অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মো. আব্দুল হাই প্রধান।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. আব্দুল হাই প্রধানের সমর্থনে মিছিল নিয়ে মোহনপুর ইউনিয়নের মুদাফর এলাকায় গেলে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কাজী মিজান ও তার ভাই কাজী মতিনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এতে মৎস্যজীবী লীগের সহসম্পাদক রিতু চৌধুরী (২৯), ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান কাজল (২৭), আওয়ামী লীগ নেতা মুসা সিপাহী (৪০), মুক্তার খালাসী (৫০) ও রাজ্জাক খালাসী আহত হন। তাদের মধ্যে দুজনকে ঢাকায় এবং বাকিদের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল হাই প্রধান বলেন, আমি আসন্ন মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আমি কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করি। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অটোরিকশা প্রতীকের কাজী মিজানুর রহমান ও তার কর্মী-সমর্থকরা নৌকার প্রচারণাকাজে বিভিন্নভাবে বাধা দিচ্ছেন এবং পুলিশি হয়রানি করছেন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার প্রচারণার শেষ দিনে মিছিল নিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে মোহনপুর বাজার থেকে মুদাফর বাজারে যাওয়ার পথে বিদ্রোহী প্রার্থী কাজী মিজানুর রহমানের ভাই মতিন কাজী অস্ত্রশস্ত্রসহ বহিরাগতদের নিয়ে আমার মিছিলে আক্রমণ করে। তাদের হামলায় একজন গুলিবিদ্ধসহ পাঁচজন মারাত্মক আহত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো এলাকাকে অশান্তির রাজ্যে পরিণত করেন তারা। এসময় আমার প্রচারণায় থাকা পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছোবহান সরকার সুভার গাড়িও ভাংচুর করা হয়।

মো. আব্দুল হাই প্রধান বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমি একাধিকবার পুলিশি সহায়তা চেয়েও পাইনি। উল্টো পুলিশ আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর চড়াও হয়ে লাঠিপেটা করে আহত করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা মতলব উত্তর থানার ওসি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, এসআই হানিফসহ আরো কয়েকজনকে শাস্তিমূলক বদলি এবং বিদ্রোহী প্রার্থী কাজী মিজানুর রহমানের বাড়ি তল্লাশি করে বহিরাগত ক্যাডারদের আটকসহ মোহনপুর পর্যটনকেন্দ্র তল্লাশি করে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর মিথ্যা মামলায় যেন কাউকে হয়রানি না করা হয়, সে ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস বলেন, স্বাধীনতার প্রতীক, উন্নয়নের প্রতীক নৌকা। এই নৌকার মাঝি বা সমর্থকদের ওপর বিদ্রোহী প্রার্থীর হামলা মেনে নেয়া যায় না।

তিনি অনতিবিলম্বে বিদ্রোহী প্রার্থীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়া বহিরাগত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গঠিত আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি হুমায়ুন হাওলাদারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দিপু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এমএ কুদ্দুস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান (এসি মিজান), সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হাওলাদার, শাহজাহান প্রধান, আওয়ামী লীগে উপ-কমিটির সদস্য আহসান উল্ল্যাহ হাসান, উপজেলা সভাপতি দেওয়ান মো. জহির, সাধারণ সম্পাদক কাজী শরীফ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম ডাবলু, প্রয়াত চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরীর ছেলে মুহিবুল হক চৌধুরী সুমিত, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শরিফ প্রধানসহ মোহনপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও এর ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীর।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর