পাকিস্তানের সংসদ ভেঙে দিলেন প্রেসিডেন্ট

আপডেট: August 10, 2023 |
inbound6047312514132090552
print news

মেয়াদ শেষের আগেই বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট। নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগেই বুধবার (৯ আগস্ট) রাতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। যদিও এর আগে প্রেসিডেন্টের কাছে পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্ট বিলুপ্তির ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে, জাতীয় পরিষদ মেয়াদ পূর্ণ করলে ৯০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধানও রয়েছে।

পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর ২০১৮ সালের ১২ আগস্ট ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার যাত্রা শুরু করেছিল। তবে গত বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের আনা আস্থা ভোটে হেরে ইমরানের সরকার ক্ষমতা হারায়। পরে শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে বিরোধীরা জোট সরকার গঠন করে।

এরই মধ্যে তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ইসলামাবাদ আদালত। আর কারাবন্দি এই পিটিআই নেতাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এ অবস্থায় আসন্ন নির্বাচনে ইমরান খানের অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এদিকে, দেশটির সংসদ ভেঙে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের ফেডারেল কেবিনেটের কার্যকারিতাও শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রেসিডেন্ট ভবনের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি দেশটির সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর করা আবেদনটি অনুমোদন দিয়েছেন।

দেশটির সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী সুপারিশ করার পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রেসিডেন্ট জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিতে ব্যর্থ হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যাবে।

জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার রাতে শেহবাজ শরীফ প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে সংসদ ভেঙে দেয়ার আবেদন করে চিঠি পাঠালে রাতেই প্রেসিডেন্ট ওই আবেদনে সই করেন। প্রেসিডেন্টের সই করা আবেদনের সারসংক্ষেপটি পার্লামেন্ট বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে। এর মধ্যে দিয়েই নতুন তত্ত্বাবধায়ক গঠনের পথে এগিয়ে যাবে পাকিস্তান।

সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং জাতীয় পরিষদের বিরোধী দলীয় নেতার কাছে ৩ দিন সময় রয়েছে। এর মধ্যে তারা একমত হতে ব্যর্থ হলে বিষয়টি জাতীয় পরিষদের স্পিকার দ্বারা গঠিত একটি কমিটির কাছে পাঠানো হবে, যা ৩ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীর জন্য একজনের নাম চূড়ান্ত করবে।

তবে কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে মনোনীতদের নাম পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো হয়। এরপর কমিশনের কাছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ২ দিন সময় রয়েছে।

এদিকে, পার্লামেন্টে বিদায়ী ভাষণে দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এসময়, ৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ১৬ মাস প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনা সবচেয়ে কঠিন ছিল বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে আগের সরকারের ব্যর্থতা ও অবহেলার দায় নিয়েই দেশ পরিচালনা করতে হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।

সূত্র: জিও নিউজ

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর