সিংগাইরে ৫০০ টাকায় শিশু ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা

আপডেট: September 24, 2023 |
inbound5317500879933424699
print news

সোহরাব হোসেন, সিংগাইর প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের সিংগাইরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা এক স্বামী পরিত্যক্তা নারীর ৫ম শ্রেনীতে পড়ুয়া মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

ওই আশ্রয়ণের বাসিন্দা জোসনা আক্তারের সহায়তায় ভিকটিমের সহপাঠির বাবা আমিনুর রহমান(৩৫) এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

অভিযুক্ত আমিনুর রহমান উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের চর নয়াডাঙ্গী দক্ষিণ পাড়া গ্রামের বাবর আলীর পুত্র ও ২ সন্তানের জনক।

এদিকে, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ধর্ষণের সহায়তাকারী জোসনার মাধ্যমে ভিকটিমকে দেয়া হয়েছে ৫০০ টাকা। সেই সাথে গর্ভধারণ এড়াতে তাকে খাইয়ে দেয়া হয়েছে জন্ম নিরোধক বড়ি।

সরেজমিন শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জানা গেছে, ভিকটিম স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী।

ভিকটিমের পরিবার ও সহযোগী জোসনা একই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা।

সম্প্রতি বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে জোসনা ওষুধ আনার কথা বলে শিশুটিকে সাথে নিয়ে জয়মন্টপ বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়।

পথিমধ্যে বাবুরচর এলাকায় শিশুটিকে আমিনুরের কাছে দিয়ে জোসনা জনৈক রমজানের মোটরসাইকেলে করে চলে যায়।

এ সময় আমিনুর ভিকটিমকে মাথায় আঘাত করে চোখ-মুখ বেঁধে পার্শ্ববর্তী ঘাস ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে। রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়।

পরে ভুক্তভোগী পরিবারটি বিচারের দাবীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাজী রিপন ও ইউনিয়ন (ভূমি)উপ- সহকারি কর্মকর্তার কাছে ধর্ণা দিয়েও ফল পায়নি।

ঘটনাটি জানতে পেরে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা অনুসন্ধান শুরু করেন। ঘটনাটি নিয়ে ভিকটিমের পরিবার সাংবাদিকদের মাধ্যমে উপযুক্ত বিচার দাবী করেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত আমিনুর শিশুটির মাকে বিষয়টি প্রকাশ না করতে হুমকি দেয়। অপরদিকে, ইউপি সদস্য কাজী রিপন ধর্ষণের সহায়তাকারি জোসনাকে বাদ দিয়ে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন ওই পরিবারটিকে।

তবে জোসনা ভিকটিমকে সাথে নিয়ে বাজারে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও ধর্ষণে সহায়তা করার কথা অস্বীকার করেন।

আলাউদ্দিনসহ স্থানীয় লোকজন ও আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাসকারী একাধিক ব্যক্তি ঘটনাটি জঘন্যতম বলে মন্তব্য করেন।

অভিযুক্ত আমিনুর রহমান ধর্ষণের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি গত ৮ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিলেটে ছিলাম। বিষয়টি নিয়ে রিপন মেম্বারও আমাকে ফোন দিয়েছিলেন।

জয়মন্টপ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার কাজী রিপন বলেন, ঘটনাটি শুনে অভিযুক্ত আমিনুরকে ফোন দিলে সে নানান তালবাহানা করে।

পরবর্তীতে মিমাংসার জন্য বসা হলেও ভিকটিমের পক্ষ উপস্থিত না থাকায় সুরাহা হয়নি।

থানায় অভিযোগের ব্যাপারে কোন পরামর্শ দেননি বলেও জানান তিনি।

জয়মন্টপ ইউনিয়ন (ভূমি) উপ-সহকারি কর্মকর্তা মো. শাহিনুর ইসলাম বলেন, আমি আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে বিষয়টি পার্শ্ববর্তী লোকজনের মাধ্যমে শুনে এসিল্যান্ড স্যারকে জানিয়েছি।

সিংগাইর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, বিষয়টি নিয়ে সাক্ষাতে কথা বলবো।

এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, এ পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি।

বিষয়টি আপনার কাছ থেকে শুনলাম। আমি এখনই পুলিশ পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর