উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলার শিকার সোকসাস সভাপতি জাহাঙ্গীর


সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে কবি নজরুল কলেজের সামনে নাদিমুল ইসলামকে হত্যায় দায়ে অভিযুক্ত করে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও হয়রানিমূলক মামলার অভিযোগ উঠেছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শেখ জাহাঙ্গীর আলম ১৯ জুলাই কবি নজরুল কলেজের সামনে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, তাঁতীলীগসহ অন্যান্য নেতাকর্মীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের উপর দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ সোহরাওয়ার্দী কলেজ হইতে কবি নজরুল কলেজের সামনে দাঁড়াইয়া ছিল বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে শেখ জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী জানান, তিনি (জাহাঙ্গীর) মামলায় উল্লেখিত ঘটনার ২ দিন পূর্বে অর্থাৎ ১৭ জুলাই তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীতে চলে আসেন এবং ইন্টারনেট ব্লাক আউটের সময় তিনি তার বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন।
এসময় তিনি বলেন, ১৯ জুলাই জাহাঙ্গীরের শারীরিক কিছু সমস্যা দেখা দিলে পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আনেন। তখন তিনি সেদিনের চিকিৎসকের দেওয়ার ব্যবস্থাপত্রেরও ছবি দেখান।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরবর্তীতে ৫ই আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করলে নিহত নাদিমুল ইসলামের মা কিসমত আরা সূত্রাপুর থানায় বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলাটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তৎকালীন বেশ কয়েকজন ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রধান আসামী করা হয়।
মামলার বাদী কিসমত আরা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ মামলার বিষয়ে তিনি অবগত নন। এছাড়া শেখ জাহাঙ্গীরকে তিনি চেনেন না।
এসময় তার ছেলের মৃত্যুর জন্য তিনি পুলিশের ছোঁড়া গুলিকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, যে ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ও যে দূরত্ব থেকে গুলি করা হয়েছে তা কোন ব্যক্তিগত অস্ত্র নয় একমাত্র পুলিশের পক্ষেই সম্ভব।
এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলামের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
এছাড়াও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয় শেখ জাহাঙ্গীর সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন যার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
মূলত স্নাতক প্রথম বর্ষে সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে ২০২১ সালে তিনি ছাত্রলীগের কিছু প্রোগ্রাম ও মিছিলে যোগদান করেন।
তখনকার তোলা কিছু ছবিকে কেন্দ্র করে এ অভিযোগ করা হতে পারে বলে ধারণা করা যায়।
কিন্তু পরবর্তী সময়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতি প্রতিষ্ঠিত হলে এর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সকল ধরনের রাজনীতি পরিত্যাগ করে আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শেখ জাহাঙ্গীর।
তিনি দৈনিক আশ্রয় প্রতিদিনে ক্যাম্পাস প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শেখ জাহাঙ্গীর আলম সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
তার গ্রেফতারের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার সহপাঠী ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।ছাত্র আন্দোলন চলাকালে তিনি তার গ্রাম নরসিংদীতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়াও আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজের আহত শিক্ষার্থীদের পাশেও তিনি তার জায়গা থেকে সাধ্যমতো চেষ্টা করে গেছেন।
এ মামলায় শেখ জাহাঙ্গীর আলমকে ৩০ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে ৩১ অক্টোবর ঢাকার সিএমএম কোর্টে হাজির করা হলে আদালত ২৮ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য্য করে তাকে জেলখানায় প্রেরণের নির্দেশনা দেন।