জাতীয় পার্টি ছাড়া বাংলার মাটিতে কোনো নির্বাচন হবে না : মোস্তফা


অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর সভাপতি মো. মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, কত সাবান এলো-গেল তিব্বত সাবান রয়ে গেল।
জাতীয় পার্টি এত ছোট দল নয়, ৪২ বছরের দল, ৯ বছর সফলতার সাথে এ দেশ পরিচালনা করেছে। জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে এ দেশের মাটিতে কোনো প্রকার নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। আপনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। জাতীয় পার্টিকে ছাড়া বাংলার মাটিতে কোনো নির্বাচন হবে না।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সেন্টারস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে, রংপুরে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে নগরীতে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এসময় উভয় দলের নেতাকর্মীদের হাতেই লাঠিসোঁটা দেখা গেছে। তবে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে থাকায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
কর্মী সমাবেশে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ করে মো. মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, মানুষ জাতীয় পার্টির ওপর আস্থা রাখায় ভিপি নুর, সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে ব্যবহার করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু আমরা সব ষড়যন্ত্র রাজপথে প্রতিহত করব।
নুরের গণঅধিকার পরিষদকে ‘পরগাছা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে দলের নিজস্ব কোনো শক্তি নেই, তাকে হিসাব করার সময় জাপার নেই। ঢাকা ও খুলনা কার্যালয়ে হামলা করেছেন। সাহস থাকলে রংপুরে আসেন; কেউ ফেরত যেতে পারবেন না।
রংপুর মহানগরে জাতীয় পার্টি সংগঠিত আছে জানিয়ে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, ভুলে যাইয়েন না আবার গর্জে উঠবে রংপুর। যেকোনো মুহূর্তে আমাদের ডাক এলে রংপুরকে অচল করে দেয়া হবে। আপনাদের মসনদ উল্টে দেয়ার জন্য এই রংপুরকে যথেষ্ট মনে করি। আমরা বলতে চাই জাতীয় পার্টি কোনো পিঁপড়া নয়। জাতীয় পার্টি হলো বাজপাখি। যাকে একবার ধরি, তাকে আর ছাড় দেয় না।
তিনি আরও বলেন, আমরা যেকোনো শক্তিকে প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখি। অন্তবর্তী সরকার সামনের সংলাপগুলোতে জাতীয় পার্টিকে যেন বাদ না দেয়, কর্মীসভার মধ্য দিয়ে এই বার্তাটা আমরা দিতে চাই। সরকার আমাদের সাথে বৈষম্য করছে তার প্রতিবাদেই আজকের এই যৌথসভা। সরকার যদি আমাদের সাথে ভাল আচরণ না করে তাহলে রংপুর থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে সাবেক রসিক মেয়র বলেন, প্রতিটি যুদ্ধের ইতিহাসে রংপুরের ভূমিকা অগ্রগণ্য। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরের বীর আবু সাঈদ জীবন দিয়ে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। সেই রংপুরকে চিনতে না পারলে আপনিও (ড. ইউনূস) বেশি দিন টিকতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টিকে মাঠ পর্যায়ে ঢেলে সাজিয়ে একটা শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত্তি তৈরি করার মেসেজ দেয়ার জন্য এই কর্মী সমাবেশ। প্রত্যেক ওয়ার্ড কমিটি, ইউনিয়ন কমিটি ও উপজেলা কমিটি শক্তিশালীভাবে গঠনে জাতীয় পার্টি প্রস্তুতি নিচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রতিটি কমিটি করার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হবে।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসিরের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আজমল হোসেন লেবু, সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর মহানগর কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি মো. লোকমান হোসেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও রংপুর মহানগর সিনিয়র সহসভাপতি মো. জাহেদুল ইসলাম ও জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব মো. আরিফ আলী।