বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ দায়িত্বশীল ও দেশপ্রেমিক: জামায়াত আমির

আপডেট: November 9, 2024 |
inbound7580893974325754237
print news

বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ দায়িত্বশীল ও দেশপ্রেমিক মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট হতে পারে, নির্দয় হতে পারে, পাষাণ হতে পারে, খুনি হতে পারে কিন্তু বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ প্রমাণ করে আমরা দায়িত্বশীল এবং দেশপ্রেমিক।

 

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নীলফামারীর বড়মাঠে আয়োজিত জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। দীর্ঘ ১৭ বছর পর নীলফামারিতে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২৪ এর শহীদদের লাশ এখন আমাদের জাতির ঘাড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের আচরণে প্রমাণ করতে হবে, রাজনীতিতে প্রমাণ করতে হবে, আগামী দেশ পরিচালনায় প্রমাণ করতে হবে যে আমরা এই শহীদেরকে শ্রদ্ধা করি।

শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন পালাবেন না। কিন্তু তিনি চলে গিয়ে তার প্রিয় দেশে আশ্রয় নিলেন। তারা আমাদের প্রতিবেশী। প্রতিবেশীকে আমরা সম্মান করি। আমার প্রতিবেশী যদি ভালো থাকে, আমিও ভালো থাকবো। প্রতিবেশীকে যদি আমি কষ্ট দেই অনুরূপ কষ্ট পাওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। কোনো প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া আমরা বিশ্বাস করি না। অনুরূপভাবে প্রতিবেশীর কাছ থেকেও আমরা সুপ্রতিবেশী সুলভ আচরণ পেতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের প্রতিবেশীকে অনুরোধ করবো যে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে, দেড় শতাধিক মামলা। তার বিরুদ্ধে খুন-গুমের মামলা আছে। অনেক মামলা তার বিরুদ্ধে আছে। আমাদের বিচারক যখন চাইবে তখন মেহেরবানি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তারা যেন শেখ হাসিনাকে তুলে দেন। আমরা চাই সাড়ে ১৫ বছর তারা জাতির ওপর যে জুলুম করেছে, বিচারের নামে যে তামশা করেছে, যে অবিচার করেছে সেটা শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের দোসররা যেন তাদের ন্যায় বিচারটা নিশ্চিত করা হয়। বিশ্বাস করি জাতি যদি ন্যায় বিচার পায় তাহলে তারা ইনশাআল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে যাবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, একজন শাসক সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসন করেছেন। তিনি যখন কথা বলতেন তখন মানুষ বলতো, ও হাসিনা আমরা আর হাসি না। মানুষকে উত্তেজিত করতেন হাসানোর চেষ্টা করতেন। যেমন ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তেমন ছিলেন তার উজির-নাজির সবাই। কে-কার চাইতে কত বেশি মিথ্যা কথা বলবে এই ছিল প্রতিযোগিতা।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকার জাতিকে ধোঁকা দিয়েছেন। মানুষ খুন করেছেন, গণহত্যা চালিয়েছেন। গুম করে আয়না ঘর তৈরি করেছেন, হাজারো মায়ের বুক খালি করেছেন, মানুষের ইজ্জতের ওপর হামলা করেছেন। আর জামায়াতে ইসলামীর সারা বাংলাদেশের ইউনিয়নের অফিসগুলো সিলগালা করে দিয়েছিলেন। ঘরের মধ্যে বসেও আমরা শান্তি পাইনি। ঘর থেকে তুলে নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দেয়া হয়েছে। এসব ছিল বাংলাদেশের চলমান বাস্তবতা। সেই কষ্ট বুকে নিয়ে আমরা এ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছি।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নীলফামারী জেলা শাখার আমির অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান বেলাল। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নীলফামারী জেলা শাখার সেক্রেটারি অধ্যাপক আন্তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ড. খায়রুল আনাম, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতিফ, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি অধ্যাপক মনিরুজ্জামান জুয়েল, রংপুর মহানগর জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ সালাফী, বাংলাদেশ ছাত্র শিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি তাজমুল হাসানসহ রংপুর বিভাগীর আট জেলা ও উপজেলার আমিরগণ বক্তব্য রাখেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর