ময়মনসিংহের গৌরীপুর ক্লুলেস হত্যা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার

আপডেট: February 2, 2025 |
inbound8091776255586513052
print news

কামরুল হাসান, ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী থানা এলাকা হতে গৌরীপুর থানার মারুফা আক্তার (২৫) ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন পূর্বক হত্যার সাথে জড়িত প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৪, সিপিএসসি, ময়মনসিংহ।

র‌্যাব-১৪, সিপিএসসি, ময়মনসিংহ‘র একটি আভিযানিক দল ০২ ফেব্রুয়ারি রাত অনুমান ২টা ১৫ মিনিটে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী থানাধীন দিঘারকান্দা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মারুফা আক্তার হত্যা মামলার সন্দিগ্ধ আসামী মো. মেহেদী হাসান সিনু ওরফে গোলাম মেহেদী (৩২), পিতা-হারুন অর রশিদ, সাং-ধুরুয়া মীরবাড়ি, থানা-গৌরীপুর, জেলা- ময়মনসিংহ‘কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

উল্লেখ্য, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দে গৌরীপুর থানাধীন রামগোপালপুর ইউনিয়নের দফাদার মো. নুরুল ইসলাম (৫০) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

যার মামলা নং-১২, তারিখঃ ১৬/০৯/২০২৪ ইং, ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০।

এজাহার পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দে তারিখ সময় অনুমান ২ টা ৩০ মিনিটে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে সংবাদ পান যে, গৌরীপুর থানাধীন রামগোপালপুর ইউনিয়নের ফতেপুর সাকিনের জনৈক আব্দুল খালেক এর আম ও পেপে বাগানের মধ্যে একটি অজ্ঞাতনামা মহিলার লাশ পড়ে আছে।

উক্ত সংবাদ পাওয়ার পর তিনি তাৎক্ষনিকভাবে গৌরীপুর থানায় সংবাদ দিলে গৌরীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

লাশের পরিচয় সনাক্ত না হওয়ায় ময়না তদন্ত শেষে গৌরীপুর থানা পুলিশ লাশ দাফনের জন্য ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এর নিকট হস্তান্তর করে।

লাশের সুরতহাল প্রস্তুত করাকালে তার ভ্যানিটি ব্যাগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা সম্পর্কিতি একটি খন্ডিত কাগজে একটি মোবাইল নাম্বার পাওয়া যায়।

গৌরীপুর থানা পুলিশ সেই মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে পরবর্তীতে ঐ অজ্ঞাতনামা মহিলার পরিচয় সনাক্ত করে। ঘটনার পর র‌্যাব-১৪, সিপিএসসি, ময়মনসিংহ ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা কার্যক্রম গ্রহন করে।

উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মেহেদী হাসান সিনু ওরফে গোলাম মেহেদী (৩২)‘কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে অবাধ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।

পরবর্তীতে, আসামী মো. মেহেদী হাসান সিনু ওরফে গোলাম মেহেদী (৩২) বিবাহিত জেনেও ভিকটিম মারুফা আক্তার (২৫) তার প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।

দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর ভিকটিম মারুফা আক্তার আসামীকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে আসামী মেহেদী হাসান সিনু ওরফে গোলাম মেহেদী বিভিন্নভাবে তাকে বুঝিয়ে প্রতিহত করে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যায়।

inbound385917171653777480

পরবর্তীতে এক পর্যায়ে ভিকটিম মারুফা আক্তার তার পরিবারের কাউকে কিছু না বলে গত ১১ সেপ্টেম্বর ২৪ খ্রীষ্টাব্দে আসামীকে সঙ্গে নিয়ে ময়মনসিংহের দিঘারকান্দা এলাকায় বোন পরিচয় দিয়ে ভাড়া বাসায় উঠে।

 

ভাড়া বাসায় থাকাকালীন অবস্থায় মারুফা আক্তার পুনরায় তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে একপর্যায়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২৪ খ্রীষ্টাব্দে ভিকটিম মারুফা আক্তার‘কে আসামীর নিজ বাড়ি গৌরীপুর থানাধীন ধুরুয়া মীরবাড়ি গ্রামে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাত্র অনুমান ৯টার সময় ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর থানাধীন রামগোপালপুর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের জনৈক আব্দুল খালেকের আম ও পেপে বাগানে নিয়ে গিয়ে প্রথমে ইট দিয়ে মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে।

প্রথম আঘাতের ফলে ভিকটিম মারুফা আক্তার অজ্ঞান হয়ে পড়লে আসামী গলা চেপে ধরে ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।

আরো উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত আসামী মো. মেহেদী হাসান সিনু ওরফে গোলাম মেহেদী (৩২)‘কে গ্রেফতার করার সময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ পুলিশের ব্যবহৃত পিস্তল কভার, হ্যান্ডক্যাপ, পুলিশের ছাতা, পুলিশের ইউনিফর্ম, পুলিশ ব্যাগ, বুট, ক্যামেরা, ভিজিটিং কার্ড, র‌্যাংক ব্যাজ, সিগনাল লাইট, ক্যাপ, রেইনকোট, টাকশোড, নেমপ্লেট, সানগ্লাস, বিজিবি ক্যাপ ও ০২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামী‘কে ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর