লাল-সবুজ জার্সি গায়ে বাংলাদেশের সমর্থক ইংল্যান্ডের নাগরিক জোনাথন


আর সবার মতো সাত সকালে হোটেলের রেস্টুরেন্টে নাস্তা করতে নেমেছিলেন তিনিও। শ্বেতাঙ্গ সেই ভদ্রলোকের পরনের জার্সিই তাঁকে নিয়ে কৌতূহলী করে তোলার পক্ষে যথেষ্ট। তিনি যে গায়ে চাপিয়েছিলেন বাংলাদেশের লাল-সবুজ জার্সি। সেটি পরেই রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দেখতে এসে জোনাথন কোন দলকে সমর্থন করেছেন, তা আর না বললেও চলছে।
দুবাইতে প্রবাসী বাংলাদেশি সমর্থকদের ঢল নামলেও এখানে যে সেরকম কিছু হবে না, তা জানাই ছিল। এই খরার মধ্যে ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে বেড়ে ওঠা জোনাথন নাজমুল হোসেনদের সমর্থক সংখ্যা বাড়িয়েছেন একজন হলেও।
ম্যাচ শুরুর আগে রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের আশপাশে চোখে পড়লো বাংলাদেশের পতাকা বিক্রি হতেও। ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যেও কয়েকজনকে পাওয়া গেল, যাঁদের পতাকা বিক্রিতে বাদ সাধছিলেন না কোনো নিরাপত্তা কর্মী।
বয়স্ক এক ভদ্রলোকও ছিলেন বিক্রেতাদের মধ্যে। তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ছুটে আসলেন। পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশের পাশাপাশি তাঁর হাতে ছিল বাংলাদেশের লাল-সবুজও। সেটি মেলে ধরা বিক্রেতা বিক্রি বাড়াতেই বোধহয় বললেন, ‘আজকের ম্যাচে আমি বাংলাদেশকে সমর্থন করছি।
’অবশ্য আগের রাতে দুবাইতে ভারতের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে পাকিস্তানের বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ সমর্থনের দুয়ারও খুলেছে কিছুটা। পাকিস্তানি সাংবাদিকদের কয়েকজন তো প্রেস বক্সে রোববার রাতেই বলছিলেন, ‘আই উইল বি চিয়ারিং ফর বাংলাদেশ টুমরো।’
এরপর সকালে নাস্তার সময় দেখা মিললো জোনাথনের। জন্ম ইংল্যান্ডে হলেও ক্রিকেটে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থক। কারণ সে দেশেই তাঁর বড় হওয়া।
তাঁদের পিছু নিয়ে গত বছর গিয়েছিলেন বাংলাদেশেও। প্রোটিয়াদের বাংলাদেশ সফরের টেস্ট সিরিজ দেখতে গিয়েই পছন্দের জিনিসটি কিনে ফেলেন তিনি, ‘বাংলাদেশের জার্সিটা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। আমি ২০০ টাকা দিয়ে একটি কিনে নেই। আমি মূলত এখানে (রাওয়ালপিন্ডিতে) এসেছি মঙ্গলবারের দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ দেখতে। এর আগে বাংলাদেশের ম্যাচ থাকায় ভাবলাম, জার্সিটা পরে ওদের জন্যও গলা ফাটিয়ে আসি।’
সেই ভাবনা থেকে সকাল সকাল প্রস্তুতি নিয়েই হোটেল থেকে রওনা হয়ে যান স্টেডিয়ামে। রাওয়ালপিন্ডিতে এটিই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম ম্যাচ হওয়ায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি ছিল ব্যাপক। স্টেডিয়ামের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যেও কয়েকজন সৌভাগ্যবান বিক্রেতা বিকোচ্ছিলেন বাংলাদেশের পতাকাও!