লারাকে সম্মান জানাতে ৪০০ রানের রেকর্ডে স্পর্শ করলেননা উইয়ান মুল্ডার

আপডেট: July 7, 2025 |
boishakhinews 11
print news

টেস্ট ক্রিকেটে যখন ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড গড়ার লড়াই চলে তীব্র প্রতিযোগিতায়, তখন ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনন্য নজির গড়লেন দক্ষিণ আফ্রিকার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক উইয়ান মুল্ডার।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়ে টেস্টে ব্যাট হাতে দুরন্ত পারফরম্যান্সের পর ৩৬৭ রানে অপরাজিত থাকলেও, বিশ্ব রেকর্ডের একেবারে দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি নিজেই ইনিংস ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ? কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার ৪০০ রানের রেকর্ডে স্পর্শ না করে সম্মান জানানোর অভিপ্রায়।

এই সিদ্ধান্ত মুল্ডারকে শুধু রান সংগ্রাহকের তালিকায় নয়, ক্রিকেটীয় মূল্যবোধের দিক দিয়েও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

 

মুল্ডারের এই ৩৬৭ রানের ইনিংস এখন টেস্ট ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ। এর আগে চারজন ব্যাটারই ৩৭৪ বা তার বেশি রান করেছেন— জয়বর্ধনে, লারা (দুইবার), ও ম্যাথু হেইডেন।

তবে মাত্র ২৭ বছর বয়সী এই প্রোটিয়া তার ইনিংসে যে দ্যুতি ছড়িয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে আধুনিক ক্রিকেট যুগের অন্যতম সেরা কীর্তি। ৩২৫ বলে ৪৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো ইনিংসটি ছিল গতিময়, ধৈর্যপূর্ণ ও একান্তই ম্যাচের প্রয়োজনে গড়া।

প্রোটিয়ারা যখন দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চে ৬২৬/৫ স্কোরে পৌঁছায়, তখন মুল্ডারের স্কোর ছিল ৩৬৭। বিশ্বরেকর্ড ছোঁয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েও ড্রেসিংরুম থেকে আসে ইনিংস ঘোষণার সিদ্ধান্ত। যার নেতৃত্বে ছিলেন স্বয়ং মুল্ডারই।

এমন মুহূর্তে অনেকেই হয়তো ব্যক্তিগত কীর্তিকে বেছে নিতেন। কিন্তু মুল্ডার বেছে নিলেন এক অন্যতর শ্রদ্ধার প্রকাশ। লারার ২০০৪ সালের গড়া ৪০০ রানের অনন্য রেকর্ডটিকে অক্ষত রেখে সম্মান জানানো।

এই ইনিংসে মুল্ডারের পাশে দাঁড়ান বেডিংহাম (৮২), প্রিটোরিয়াস (৭৮), ব্রেভিস (৩০) ও কাইল ভেরাইনি (৪২*)। তাদের সম্মিলিত প্রয়াসে দক্ষিণ আফ্রিকা দাঁড় করায় প্রথম ইনিংসে বিশাল স্কোর, যা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ একচেটিয়াভাবে তাদের দিকেই টেনে নেয়।

ট্রিপল সেঞ্চুরির পর ইনিংস ঘোষণা নতুন কিছু নয়। হাশিম আমলা (৩১১*), মাইকেল ক্লার্ক (৩২৯), ডেভিড ওয়ার্নার (৩৩৫)– এমন দৃষ্টান্ত আগেও দেখিয়েছেন। কিন্তু ৪০০ রানের রেকর্ডের এতটা কাছাকাছি গিয়েও নিজেই থেমে যাওয়ার সাহসিকতা এই প্রথম। আর তা এসেছে একজন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের কাছ থেকে।

মুল্ডারের ইনিংসে রেকর্ডের ঝলক:
১. দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্টে দ্বিতীয় ট্রিপল সেঞ্চুরি (প্রথম: হাশিম আমলা, ৩১১*)।
২. টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম ট্রিপল সেঞ্চুরি (২৯৭ বল, দ্রুততম: শেবাগ, ২৭৮ বল)।
৩. অ্যাওয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ স্কোরার (৩৬৭), ভেঙেছেন হানিফ মোহাম্মদের ৬৬ বছরের রেকর্ড (৩৩৭ রান, ১৯৫৮)।
৪. টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ম্যাচেই ট্রিপল সেঞ্চুরির রেকর্ড। ১৯৬৪ সালে তার আগে করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সিম্পসন (৩১১ রান)।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর