ইতিহাসে প্রথম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী


প্রায় দুই দশক পর বড় রাজনৈতিক সমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামী ১৯ জুলাই দলটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
জামায়াত সূত্র জানায়, এই সমাবেশকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জাতীয় সমাবেশ’ হিসেবে বিবেচনা করছে দলটি। অংশগ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১২ থেকে ১৩ লাখ মানুষ।
ঢাকার দুই মহানগরসহ গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলা থেকে অন্তত ১০ লাখ এবং দূরবর্তী এলাকা থেকে আরও কয়েক লাখ অংশগ্রহণকারী আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এরই মধ্যে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং মঞ্চ নির্মাণ, নিরাপত্তা, পানি, স্যানিটেশনসহ সার্বিক প্রস্তুতির খোঁজখবর নিয়েছেন।
সাত দফা দাবির সমাবেশ
এই সমাবেশে জামায়াত সাত দফা দাবি উপস্থাপন করবে, যার মধ্যে রয়েছে:
নির্বাচনের জন্য সমতাভিত্তিক (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) পরিবেশ নিশ্চিত করা
জুলাই মাসের গণহত্যার বিচার
রাজনৈতিক সংস্কার
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন
সংবিধানে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি (PR) সংযুক্ত করা
প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা
সমাবেশ সফল করতে এক হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। এলইডি স্ক্রিন, চিকিৎসা, অস্থায়ী শৌচাগার, পানীয় জল, ওজু ও নামাজের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। প্রচার চলছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিরোধী দলগুলোকে আমন্ত্রণ
জামায়াত চায়, এই সমাবেশ ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তির মিলনমেলা’ হয়ে উঠুক। বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দল ও সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। জামায়াতের মিডিয়া প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, “আমরা চাই এই সমাবেশ ঐক্যের বার্তা দিক।”
সমাবেশস্থল পরিদর্শনের সময় মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, “আমরা নির্বাচনের সময় পেছানোর পক্ষে নই, তবে চাই সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। বর্তমান পরিস্থিতিতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, যা গ্রহণযোগ্যতার জন্য প্রয়োজনীয়।”
উল্লেখ্য, ২৮ জুন ইসলামী আন্দোলনের এক মহাসমাবেশে জামায়াত অংশ নিলেও বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
এবার সেই ‘কৌশলগত ভুল’ এড়িয়ে যেতে চায় জামায়াত। দলটির নেতারা আশা করছেন, এই সমাবেশের মাধ্যমে তারা রাজনীতিতে আবারও শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবে।