এ মাসেই আসছে এনসিপির ৫১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ


জুলাই অভ্যুত্থানের পর আত্মপ্রকাশ করা দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ৫১ সদস্যের ‘চমক লাগানো’ উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করতে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য এনসিপি ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক যাচাই-বাছাই উত্তীর্ণ হয়েছে। দলটি বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিতে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করতে যাচ্ছে।
দলটির সূত্রে জানা গেছে, উপদেষ্টা পরিষদে দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ, বিতর্কবিহীন এবং দলীয় আদর্শ ও জুলাই স্পিরিট ধারণকারী ব্যক্তিরা রাখা হবে। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রবীণ নেতা, প্রথিতযশা সাংবাদিক, শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ ও অন্যান্য পেশাজীবীরা এই পরিষদে থাকবেন। তবে এই পরিষদ কার্যনির্বাহী ক্ষমতাসম্পন্ন হবে না, শুধুমাত্র নীতিগত পরামর্শ দেবে।
উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের জন্য গঠিত সার্চ কমিটির সদস্য ও এনসিপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ গণমাধ্যমকে জানান, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সেখান থেকে বিশটি বিশেষায়িত সেক্টরের অভিজ্ঞদের নিয়ে ৫১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। তিনি বলেন, “এ তালিকাতে বড় চমক থাকবে এবং দলীয় সাধারণ সভার পর্যালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে শিগগিরই এ পরিষদ ঘোষণা করা হবে।”
এর আগে গত ১৬ মে ১২ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। এতে সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনকে সমন্বয়কারী করা হয়। এছাড়া কমিটির মধ্যে ছিলেন তাজনুভা জাবীন, সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, ড. আতিক মুজাহিদ, অর্পিতা শ্যামা দেব, খালেদ সাইফুল্লাহ, আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, মোশফিকুর রহমান জোহান, মীর আরশাদুল হক, মাওলানা সানাউল্লাহ খান, দিলশানা পারুল ও খান মুহাম্মদ মুরসালীন।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, চলতি মাসেই ঘোষিত হতে যাওয়া উপদেষ্টা পরিষদে বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অন্তত ১০ জন প্রবীণ নেতা থাকবেন। সাবেক আমলা, আইন পেশা, সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বেশি থাকবেন। এছাড়া সাংবাদিক ও শ্রমিক নেতারাও থাকবেন।
এনসিপি মনে করছে, দলটির তরুণ নেতৃত্বের বয়স ২৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ চলার জন্য তাদের প্রতিটি পদক্ষেপে প্রবীণদের দিকনির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ। উপদেষ্টা পরিষদ কার্যকর হলে তরুণ নেতৃত্ব ও অভিজ্ঞ নাগরিকদের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি হবে, যা এনসিপিকে দেশের জাতীয় রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করবে।
উপদেষ্টা পরিষদের কাজের পরিধি মূলত দলকে নীতিগত পরামর্শ দেওয়া, সংকটকালে দিকনির্দেশনা, সাংগঠনিক কাঠামো ও সংস্কার বিষয়ে মতামত প্রদান এবং কৌশল নির্ধারণে সহায়তা করা। তবে তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।