এরদোয়ানের বক্তব্যের প্রতিবাদে তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে তলব করল ইরান

আপডেট: December 12, 2020 |
print news

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে বক্তব্য করায় তেহরানে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবজাদে শুক্রবার এ খবর জানিয়ে বলেন, আজারবাইজান সফরে গিয়ে এরদোয়ান ইরানের ব্যাপারে যে অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্য দিয়েছেন, তার প্রতিবাদে তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছে।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, তেহরানে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের বক্তব্যের ব্যাপারে অবিলম্বে আঙ্কারার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

খাতিবজাদে বলেন, তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে একথা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, অপর দেশের ভূমি দখল ও সম্প্রসারণকামী সাম্রাজ্যবাদী শাসনের যুগ বহু আগে শেষ হয়ে গেছে। তাকে আরও জানানো হয়েছে, ইরান তার সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার ব্যাপারে কারও সঙ্গে আপস করবে না। ইরান তার জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নেও কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সাম্প্রতিক যুদ্ধে আর্মেনিয়ার হাত থেকে নিজের ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার উপলক্ষে বৃহস্পতিবার আজারবাইজান এক উৎসব পালন করে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ওই উৎসবে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত এক সামরিক কুচকাওয়াজে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের উপস্থিতিতে বক্তব্য প্রদান করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তিনি তার বক্তব্যে আজারবাইজান ও ইরানের সীমান্তবর্তী আরাস নদী নিয়ে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী কবিতা আবৃত্তি করেন। ওই কবিতায় ইরানের আজারবাইজান প্রদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় আরাস নদীর উত্তর অংশে অবস্থিত বর্তমান স্বাধীন রাষ্ট্র আজারবাইজানের পক্ষ থেকে আক্ষেপ প্রকাশ করা হয়েছে।

বাস্তবতা হচ্ছে, ১৮১৩ সালে তৎকালীন জার-শাসিত রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত ‘গুলিস্তান’ নামক চুক্তির মাধ্যমে সে সময়কার ইরানের আজারবাইজান অঞ্চলের বিশাল এলাকা আলাদা হয়ে রুশ সীমান্তের অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রায় আড়াই লাখ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সেই আলাদা হয়ে যাওয়া অংশের একাংশ নিয়ে বর্তমান আজারবাইজান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত।

পরবর্তী সময়ে এই রাষ্ট্র ওসমানীয় সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এবং এরদোয়ান তার কবিতার মাধ্যমে পরোক্ষভাবে সেই যুগের প্রতি ইঙ্গিত করে ইরানের আজারবাইজান প্রদেশ নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। একইসঙ্গে তিনি ইরানের আজারবাইজান প্রদেশের জনগণকে বিচ্ছিন্নতাবাদের দিকে উসকানি দিতে চেয়েছেন। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ওসমানীয় সাম্রাজ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে। সূত্র: পার্সটুডে

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর