রিয়ালকে হারিয়ে চমক দেখাল শেরিফ

কয়েকদিন আগে যেভাবে জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ, এবার হারল অনেকটা সেভাবেই। ইন্টার মিলানের আক্রমণে কোণঠাসা হয়েও কোনোমতে ৩ পয়েন্ট পেয়েছিল ইউরোপের সফলতম দলটি। এবার তাদের হলো উল্টো অভিজ্ঞতা।
একের পর এক আক্রমণে শেরিফ তিরাসপুলকে কাঁপিয়ে দিলেও হারের বিষাদ সঙ্গী হলো কার্লো আনচেলত্তির দলের। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে মলডোভার দলটি।
আগের ম্যাচে লা লিগায় ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে আসা রিয়াল ইউরোপ সেরার মঞ্চে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ফিরেই দেখল হারের মুখ। ১৮ মিনিটে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে বেনজেমার ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন শেরিফ গোলরক্ষক গিওর্গস আথানাসিয়াদিস।
ম্যাচে এটাই লক্ষ্যে থাকা প্রথম শট। পাঁচ মিনিট পর ডি-বক্সের ভেতরে বল পেয়ে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি অরক্ষিত ফেদে ভালভেরদে।
পরের মিনিটে প্রতি-আক্রমণে এগিয়ে যায় শেরিফ। মাঝমাঠ থেকে আসা বল ধরে চমৎকার ক্রস বাড়ান ক্রিস্তিয়ানো। অনেক সময় পাওয়া ইয়াখশিবোয়েভ দেখেশুনে হেডে খুঁজে নেন জাল।
সফরকারীদের দুই খেলোয়াড়ই ছিল অরক্ষিত! ৩২তম মিনিটে থিবো কোর্তোয়ার দুর্বল শটে বিপদে পড়তে যাচ্ছিল রিয়াল। ক্লিয়ার করতে গিয়ে স্বাগতিক গোলরক্ষক উল্টো খুঁজে নেন প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে। তবে শেরিফ কাজে লাগাতে পারেনি সুযোগ। ইয়াখশিবোয়েভের শট চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে।
৩৫তম মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ভিনিসিউস। পরের মিনিটে এদেন আজারের শট ঝাঁপিয়ে ফেরান আথানাসিয়াদিস। ফিরতি বলে ছয় গজ দূর থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি নাচো ফের্নান্দেস।
পরের মিনিটে ডি-বক্সের মাথা থেকে বেনজেমার শট পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। ৪২তম মিনিটে কাসেমিরোর শট ঠেকিয়ে আবারও সফরকারীদের ত্রাতা গোলরক্ষক। তার নৈপুণ্যে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় শেরিফ।
দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য আরও বেশি মরিয়া হয়ে ওঠে রিয়াল। কিন্তু তাদের আক্রমণগুলো কোনো না কোনোভাবে ঠেকিয়ে ব্যবধান ধরে রাখছিল শেরিফ। ৬৫তম মিনিটে আর পারেনি। সফল স্পট কিকে সমতা ফেরান বেনজেমা। ভিনিসিউসকে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ফের্নান্দো ফাউল করলে ভিএআরের সহায়তায় পেনাল্টি দেন রেফারি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটি বেনজেমার ৭২তম গোল। রাউলকে ছাড়িয়ে এককভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় চার নম্বরে উঠে এলেন তিনি। ৭ মিনিট পর ক্রিস্তিয়ানোর ক্রসে বল জাল পাঠান ব্রাজিলিয়ান সতীর্থ ব্রুনো। তবে তিনি অফ সাইডে থাকায় গোল পায়নি শেরিফ।
তিন মিনিট পর কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে রিয়ালের দারুণ দুটি সুযোগ ব্যর্থ করে দেন আথানাসিয়াদিস। লুকা মদ্রিচের বুলেট গতির শট ঠেকানোর পর এদের মিলিতাওয়ের চেষ্টাও রুখে দেন তিনি।
৮২তম মিনিটে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি রদ্রিগো। ছয় মিনিট পর পায়ের কারিকুরিতে দুই জনকে কাটিয়ে চমৎকার ক্রসে তিনি খুঁজে নেন লুকা ইয়োভিচকে।
কিন্তু ঝাঁপিয়ে পড়ে তার চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন শেরিফ গোলরক্ষক। ৮৯তম মিনিটে থ্রো ইনে ডি-বক্সে বল পান আদামা ত্রাওরে। তিনি খুঁজে নেন ডি-বক্সের বাইরে অরক্ষিত থিলকে। তার বুলেট গতির শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে জড়ায় জালে। ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি কোর্তোয়া।
ছয় মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে বেনজেমার সামনে সুযোগ এসেছিল আবার সমতা ফেরানোর।
কিন্তু ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফরাসি ফরোয়ার্ড গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে দলকে হতাশ করেন।
২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে শেরিফ। ৩ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রিয়াল। ইন্টার মিলান ও শাখতার দোনেৎস্ক আছে পরের দুটি স্থানে। তাদের পয়েন্ট ১ করে।