শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব নিয়ে ফেসবুকের মিথ্যাচার

আপডেট: October 1, 2021 |
print news

ইনস্টাগ্রাম তরুণদের ‘ইতিবাচকভাবে সাহায্য করছে’ বলে মিথ্যাচার করেছে ফেসবুক। মার্কিন সিনেটে বিশ্ব নিরাপত্তা প্রধান অ্যান্টিগোন ডেভিস, শিশু সুরক্ষার বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে একথা জানান।

ইনস্টাগ্রামের নিজস্ব গবেষণায় কীভাবে প্ল্যাটফর্মটি শিশুদের সুস্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে এ নিয়ে বিভিন্ন তথ্য উঠে আসে। এর আগে, ইনস্টাগ্রামের বস অ্যাডাম মোসেরি বলেছিলেন, কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর অ্যাপটি ‘খুবই সামান্য’ প্রভাব ফেলে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রথমে ফেসবুকের নিজস্ব গবেষণার ওপর ভিত্তি করে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এখানে বলা হয়, ইনস্টাগ্রাম কিশোরীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে এটি তাদেরকে নিজেদের শরীরের গড়ন নিয়ে হতাশ করে ও এতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া এটি তাদের উদ্বেগ ও অবসন্নতাকে বাড়িয়ে তোলে।

কিন্তু মিস ডেভিস তখন বলেছিলেন, “আমাদের প্ল্যাটফর্মটিকে আরও ভালো করার জন্যেই আমরা এই গবেষণাটি পরিচালনা করি, খারাপ কমিয়ে ভালো আমরা কোথায় উন্নতি করতে পারি তা শনাক্ত করাই আমাদের গবেষণার মূল উদ্দেশ্য।”

তিনি সেসময় আরও বলেন, “আমাদের প্ল্যাটফর্মগুলোকে আমরা বন্ধুদের এবং পরিবারের সাথে অর্থপূর্ণ যোগাযোগের একটি জায়গা তৈরি করতে চাই। মানুষ এখানে নিরাপদ বোধ না করলে আমরা সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারব না।”

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও পরিবহণ উপকমিটির সভাপতি রিচার্ড ব্লুমেনথাল ভোক্তা ও পণ্যের সুরক্ষার বিষয়ে ফেসবুকের ওই গবেষণায় যে নেতিবাচক সম্পর্ক দেখানো হয়েছে ফেসবুক তা অস্বীকার করে বলে জানান।

তিনি বলেন, “আমরা জানি এটা আমাদের শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের চেয়ে মুনাফা বৃদ্ধিকেই বেছে নেয়। শিশুদের সুরক্ষার বিষয়ে তারা নিজেদেরকেই জবাবদিহি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আমাকে যে প্রশ্নটি তাড়া করে বেড়াচ্ছে তা হল, এটা জানার পরও আমরা কীভাবে ফেসবুককে বিশ্বাস করতে পারি।”

শুনানিতে, মিস ডেভিস বারবার কমিটির প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হন এবং বলেন যে তাকে ফেসবুক টিমের সাথে প্রাসঙ্গিক বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

তবে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনের সঙ্গে ফেসবুক দ্বিমত পোষণ করে।

গবেষণাটির প্রধান প্রতিতি রায়চৌধুরী বলেন, ‘টিনেজ’ মেয়েদের জন্য ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার যে ‘বিষাক্ত’ প্রভাব ফেলে তা এই গবেষণাটি দেখায় নি। বরং এটি দেখিয়েছে যে, অনেক কিশোর-কিশোরী যখন কঠিন সব সমস্যার মুখোমুখি হয় তখন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারের অভিজ্ঞতা তাদের সাহায্য করে।

কিন্তু একটি স্লাইডে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারে ফেসবুক শুধুমাত্র ‘বডি ইমেজ’-এর প্রভাব রয়েছে বলে স্বীকার করেছে। প্রতি তিনজন কিশোরী মেয়ের মধ্যে একজন ইতিমধ্যেই এই সমস্যায় ভুগছে। ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার তাদের এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।

ফেসবুক জানায়, বিশেষভাবে ফিল্টার করা ছবি, সেলফি পোস্ট করা এবং বিভিন্ন বিষয়ে হ্যাশট্যাগ দিয়ে বিষয়বস্তু দেখার ফলে মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত হয়।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর