ফেসবুক লাইভে এসে চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুরের আত্মহত্যা

আপডেট: February 2, 2022 |
print news

নায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খাঁন ফেসবুক লাইভে এসে পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার ধানমণ্ডিতে নিজের বাসায় আত্মহত্যা করেছেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর।

ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘ব্যবসায়ী মহসিন ধানমন্ডির বাসায় একাই থাকতেন। তিনি নিজের পিস্তল মাথায় ঠেকিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাস্থলে ইতোমধ্যে পুলিশ গেছে।’

আত্মহত্যার আগে তিনি ফেসবুক লাইভে বলেন, আমি মহসীন। এক সময় আমি ভালো ব্যবসায়ী ছিলাম। বর্তমানে আমি ক্যানসারে আক্রান্ত।

আজকে লাইভে আসার কারণ হলো বাস্তবতা হলো, আমার যে অভিজ্ঞতা, মানুষের সঙ্গে শেয়ার করতে পারলে হয়ত শিখতে পারবে। কিছুদিন আগে আমার খালা মারা গেছেন, তার এক ছেলে আমেরিকায় থাকেন। কিন্তু ছেলেটা আসেনি। এটা আমাকে দুঃখ দিয়েছে, কষ্ট দিয়েছে।

আজ আমার এক খালা মারা গেছেন, তার একটি ছেলে আমেরিকায় ছিল। তার তিনটা ছেলে ইঞ্জিনিয়ার, তারা ঢাকায় আছেন। মায়ের দাফন কাফন করেছেন, এটা ভাগ্য।

তিনি আরো বলেন, আমার একটা মাত্র ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় থাকে। আমি বাসায় একা থাকি। খালা মারা যাওয়ার পর আমার খুব ভয় করছে, আমি যদি মরে পড়েও থাকি এক সপ্তাহে কেউ জানবে না- আমি মরে পড়ে আছি।

গত করোনা শুরুর আগে থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কি কষ্ট; যারা একা থাকে তারাই বোঝে।

আমার এখন পৃথিবীর মানুষের প্রতি কোন আবেগ নেই। আমি প্রতারিত হয়েছি। আমি মানুষের কাছ থেকে সাড়ে ৫ কোটি টাকা পাই। পৃথিবীতে একটা জিনিস দেখলাম, ছেলে বলেন, মেয়ে বলেন, স্ত্রী বলেন কেউ কারো নয়।

আজকে যেভাবে মেইনটেন্ট করেন, কালকে হয়ত পারবেন না। এটা পরিবারের লোকজন মেনে নিতে পারে না। স্ত্রী ও পরিবারকে বুঝতে হবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইনকাম কমে যায়। বাবারা কষ্ট করেন, নিজে না খেয়ে সন্তানদের খাওয়ান। অনেকদিন থেকে আমি আপসেট। আমি যতটুকু করেছি নিজের চেষ্টায় করেছি।

নিজের উপর এতটায় বিতৃষ্ণা জন্মছে যে বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই। ভেতরে অনেক কষ্ট; শেয়ার করলাম। আমার আত্মীয়সহ অনেকেই দেখছেন, কারো সঙ্গে যদি অন্যায় করে থাকি ক্ষমা করবেন।

সন্তানদের নিয়ে তিনি বলেন, প্রকৃত বাবা চেষ্টা করেন সন্তানদের মানুষ করার- এটা সন্তানদের বোঝা উচিত। নিজেকে আর মানায় নিতে পারলাম না। এটাই শেষ দেখা।

সবাই ভালো থাকবেন, আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেটা দিয়ে সুইসাইট করার চেষ্টা করছি, এটা অবৈধ না; এক বছরের লাইন্সেস করা।

‘মোহাম্মাদপুর কবরস্থানে আমাকে দাফন করা হোক। বাবা, ভাই-বোন সবাই আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। পৃথিবীটা সুন্দর সবাই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চায়। সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। তিনা ও নিশান তোমরা দুই ভাই বোন; মিলে মিশে থেকো। একে অপরের খোঁজখবর নিও।’

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর