কেন চিরকুমারী ছিলেন লতা মঙ্গেশকর?

‘ভারতরত্ন’ লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে আচমকাই থমকে গিয়েছে ভারতের সঙ্গীতাঙ্গন থেকে শুরু করে গোটা দেশ। চারিদিকে অনুভূত হয় নিস্তব্ধতা আর স্বজন হারানোর হাহাকার। ৯২ বছরে কোটি হৃদয়ের ভালোবাসা পেলেও পরিবারকে ভালোবাসতে গিয়ে নিজের জীবনে জায়গা হয়নি কোন প্রেমিকের। চিরকুমারী খেকে গেলেন সারা জীবন। জীবদ্দশায় এক সাক্ষাৎকারে এর কারণ বর্ণনা করেছিলেন তিনি।
ঐ সাক্ষাৎকারে উপস্থাপক খালিদ মুহাম্মদ লতাকে প্রশ্ন করেছিলেন আজীবন কুমারী থাকলেন, একাকীত্ব ঘিরে ধরেনি?
এই প্রশ্নের উত্তরে লতা বলেন, ‘‘একমাত্র আমার মা আমার বিয়ে নিয়ে জোরাজুরি করতেন, একসময় তিনিও হাল ছেড়ে দেন। আমার কাছে আমার পরিবার বিয়ের চেয়ে বেশি জরুরি ছিল। কিন্তু এমনটা অস্বীকার করব না যে আমাকে কোনওদিন একাকীত্ব ঘিরে ধরেনি, তাহলে তো আমি মানুষই হতাম না।
‘‘বিবাহিত হোন কিংবা সিঙ্গেল, একাকীত্ব সবার জীবনে আছে। কখনও কখনও এই একাকীত্ব ক্ষতিকারক হয়, তবে আমি বলব আমি খুব সৌভাগ্যবান যে ভালোবাসার মানুষরা আমার আশেপাশে সবসময় থেকেছে।’’
উপস্থাপক তাকে আরও জিজ্ঞাসা করেন, লতা মঙ্গেশকর কোনওদিন প্রেমে পড়েননি?
মুচকি হেসে এর জবাব দিয়েছিলেন লতা। বলেন, ‘‘হ্যাঁ, পড়েছে তবে শুধু নিজের কাজের সঙ্গে। আর আমি ভালোবেসেছি আমার আপনজনদের, আমার পরিবারকে, আর কাউকে নয়।’’
১৯২৯ সালে মধ্যপ্রদেশের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম হয় লতা মঙ্গেশকরে। ছোট থেকেই সংগীতের পরিবেশে বেড়ে ওঠেন। পণ্ডিত দীনানাথ মঙ্গেশকরের সবচেয়ে বড় সন্তান লতা, কৈশরে পা দিয়েই বাবা-কে হারান তিনি। ভাই-বোনেদের দায়িত্ব অভিভাবকের মতো পালন করেছিলেন ছোট্ট লতা।
প্রথমবার মঞ্চে গান গেয়ে ২৫ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন তিনি। চলচ্চিত্র জগতে তার পথচলা শুরু হয়েছিলো অভিনেত্রী হিসেবে। তখন তার বয়স মাত্র ১৩! গায়িকা হিসাবে প্রথম ব্রেক ছিল মরাঠি সিনেমা ‘কিতি হাসাল’ দিয়ে। সেই থেকে ধীরে ধীরে হিন্দি সিনেমার জগতে তার উত্তরণ।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস