হিজাব বিতর্কে বিস্ফোরক কঙ্গনা

আপডেট: February 11, 2022 |
print news

রাজ্যের গণ্ডি ছেড়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে গোটা ভারতে। হিজাব বিতর্কে রাজনৈতিক নেতা থেকে রূপালি পর্দার তারকা, মুখ খুলেছেন প্রত্যেকেই। এবার কর্ণাটকের হিজাব বিতর্কে মুখ খুললেন কঙ্গনা রানাওয়াত।

নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন অভিনেত্রী। লেখক আনন্দ রঙ্গনাথনের টুইটের স্ক্রিনশট পোস্ট করেছেন তিনি, যেখানে দুটি ছবির মধ‍্যে তুলনা করা হয়েছে।

তিনি লিখেছেন, ‘যদি সাহস দেখাতেই হয় তবে আফগানিস্তানে বোরকা না পরে দেখাও। নিজেকে বন্দি না করে শিকল ভাঙতে শেখো।’ প্রসঙ্গত, স্ক্রিনশটে দুটি ছবির মধ‍্যে তুলনা করা হয়েছে।

প্রথম ছবিটি ১৯৭৩ সালের। সেখানে ইরানের কয়েকজন নারীকে বিকিনি পরে সমুদ্র সৈকতে বসে থাকতে দেখা গেছে। পরের ছবিটি সাম্প্রতিক কালের, যেখানে শুধুই বোরকা পরিহিতদের ভিড়।

এদিকে হিজাব নিয়ে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পড়ুয়ারা কেউ ধর্মীয় পোশাক পরে কলেজে প্রবেশ করতে পারবেন না বলে বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক মামলার শুনানিতে নির্দেশ দিয়েছেন কর্ণাটক হাইকোর্ট। আদালতে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি।

আনন্দবাজারের এক খবরে বলা হয়, হিজাব নিয়ে সরকারি নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা চলছে। হার্ইকোর্টে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছে।

মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করার আগে প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্থি বলেন, কর্নাটকের কলেজগুলো খোলা যেতে পারে, তবে যেহেতু বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন তাই পড়ুয়ারা কোনো রকম ধর্মীয় পোশাক পরে কলেজে প্রবেশ করতে পারবেন না।

শুধু মুখের কথা শুনে কোনো রকম প্রতিবেদন না করার জন্য সাংবাদমাধ্যমকে নির্দেশে দিয়েছেন আদালত। পডুয়াদের সঙ্গে আচারণে চরম সংযম বজায় রেখে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালত বলেন, মাথায় স্কার্ফ পরা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে কি না তা বিবেচনা করছি। সেই সঙ্গে এটি ধর্মীয় অনুশীলনের অংশ কি না তাও বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে।

এদিকে হিজাব ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গে যাতে কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে সব থানার উদ্দেশে সতর্কতা জারি করেছেন রাজ্য গোয়েন্দারা। রাজ্যের সব জেলার পুলিশ সুপার, কমিশনারেটের মাধ্যমে সেই সতর্কবার্তা প্রতিটি থানাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ ইতিমধ্যেই এরাজ্যে বেশ কিছু জায়গাতে হিজাবের স্বপক্ষে প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

কর্ণাটকের একটি স্কুলে সম্প্রতি ছাত্রীদের হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এর পর আরও কয়েকটি স্কুল হিজাব পরে ছাত্রীদের ঢুকতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে। এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছিলেন কর্নাটকের উদুপির পাঁচ পড়ুয়া। গত মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক দফা শুনানি হয়।

কর্ণাটকের মাণ্ড্য প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজের হিজাব-বিতর্কে তোলপাড় গোটা ভারতবর্ষ। কর্ণাটক থেকে বিক্ষোভের পারদ এখন গোটা ভারতবর্ষে। এ নিয়ে চলছে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ। কলকাতায়ও এ নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ হয়েছে। এ নিয়ে সতর্ক দেশটির বিভিন্ন রাজ্য।

কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরু শহরের স্কুল-কলেজের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি করেছে কর্ণাটক সরকার। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে বলে সরকারি এক নির্দেশনায় জানানো হয়েছে। খবর আনন্দবাজারের।

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার কমল পান্ত বলেন, ‘শহরে উত্তেজনা রয়েছে। নতুন করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

তাই শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা অপরিহার্য। এ পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে স্কুল-কলেজের আশপাশে ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুযায়ী ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।’

তিনি জানান, ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ২০০ মিটারের মধ্যে কোনো রকম জমায়েত বা বিক্ষোভ প্রদর্শন চলবে না।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর