কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণ মানুষের ঢল

আপডেট: February 21, 2022 |

ঘড়িতে সকাল ৮টা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা মানুষের সারি এদিকে পলাশী মোড় ওদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। কারও হাতে একটিমাত্র ফুল, কারও হাতে একগুচ্ছ। কারও হাতে ছোট পতাকা। তবে সবার মুখে অমর একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি।’

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মাইকে সেই সুর ছড়িয়ে পড়ছে দিকে দিকে। মানুষের এই শ্রদ্ধা বলে দিচ্ছিল, মাতৃভাষা আর দেশের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের টান অকৃত্রিম।

আজ সোমবার অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অহঙ্কার আর শোকের এই দিনটি পালন করছে জাতি। একুশের প্রথম প্রহর থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নেমেছে।

রবিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম। এরপর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানান, তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী। এবারও করোনার কারণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শহীদ মিনারে সশরীরে আসেননি।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরীর পক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এর পরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আওয়ামী লীগের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

এরপর পর্যায়ক্রমে তিন বাহিনীর পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর বিদেশি কূটনীতিকরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান। এরপর পুলিশ বাহিনীর পক্ষে আইজি বেনজির আহমদ এবং র‌্যাবের মহাপরিচালক পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এরপরই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে কঠোর নিরাপত্তা কিছুটা শিথিল করা হয় বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। এ সময় হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে শহীদ মিনারের দিকে। বিপুলসংখ্যক মানুষের শৃঙ্খলা রক্ষায় নিরাপত্তা কর্মীদের হিমশিম খেতে হয়।

গত কয়েক দিন ধরেই একুশের দিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। একদিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পুরো প্রাঙ্গণ ধুয়েমুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ যখন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তখন মাইকে অমর একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ বাজানো হয়। মাইকে বিভিন্ন কবির একুশের কবিতা আবৃত্তি করেন আবৃত্তি শিল্পীরা।

‘শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উদযাপনের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় কর্মসূচির সাথে সঙ্গতি রেখে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করছে।

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর