বাংলাদেশ কোনোদিন ঋণ পরিশোধে ডিফল্টার হয়নি, হবেও না

আপডেট: April 6, 2022 |

শ্রীলঙ্কার বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের বিষয়ে বাংলাদেশ অত্যন্ত সতর্ক বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের এ সংক্রান্ত বক্তব্যের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শ্রীলঙ্কার বিষয়টি নিয়ে, এটা বাস্তব।

তবে আমরা সরকার গঠন করার পর থেকে এ পর্যন্ত উন্নয়নের ক্ষেত্রে যত ঋণ নিয়েছি তা সময়মতো পরিশোধ করছি। বাংলাদেশ কোনোদিন ঋণ পরিশোধে ডিফল্টার হয়নি, হবেও না। সেদিক থেকে আমাদের অর্থনীতির ভিত্তি অনেক মজবুত। সেটা আমি বলে রাখতে চাই। আমরা অত্যন্ত সতর্ক।

বুধবার (৬ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের ১৭তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে জিএম কাদের তার বক্তব্যে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশের অবস্থাও শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

সংবিধানের সত্তর অনুচ্ছেদ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সত্তর অনুচ্ছেদ আছে বলেই রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা আছে। ভারসাম্য আছে। এটা হলো বাস্তবতা। সত্তর দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে স্থিতিশীল রাখা হয়েছে, এটাই বাস্তবতা। এখন এটাও দেওয়া হয়েছে, অবৈধভাবে যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করে তাদের ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট পর্যন্ত হবে।

দ্রব্যমূল্যসহ জাতীয় জীবনের নানা সমস্যা নিয়ে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদেরের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা যেসব কথা বলেছেন, আমাদের সংবিধান পাঠদান করিয়েছেন। তার প্রতিটির উত্তরই আছে। তার সবগুলোর জবাব দেবো।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য হলো এমন একটি দলের থেকে সংবিধানের বিষয় শুনতে হচ্ছে, যে দলটি ক্ষমতায় এসেছিল সংবিধান লঙ্ঘন করে, ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে মার্শাল ল জারি করে। মার্শাল ল’র মাধ্যমে যাদের জন্ম, যার নেতা ক্ষমতাই দখল করেছিল তৎকালীন রাষ্ট্রপতিকে বিদায় দিয়ে- সেনাপ্রধান হয়ে গেলেন রাষ্ট্রপ্রধান। যে সংবিধান স্থগিত করে ক্ষমতায় এসেছিল তার থেকে আজকে আমাদের সংবিধান শিখতে হচ্ছে। সংবিধানের ব্যাখ্যা শুনতে হচ্ছে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একে তো করোনা, তারপর ইউক্রেনে যুদ্ধ। সমস্ত ইউরোপে সাড়ে সাত ভাগের ওপরে মূল্যস্ফীতি। কোনো কোনো দেশে ৮০ ভাগ পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি হয়ে গেছে। এটা হয়েছে একটা করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায়। সেখানে বাংলাদেশে ৬ ভাগের নিচে আছে মূল্যস্ফীতি। বিরোধীদলের নেতা বলেছেন মাথাপিছু আয়ও যেমন বেড়েছে, দ্রব্যমূল্যও বেড়েছে। এটা হলো বাস্তব।

তিনি বলেন, এই করোনার ধাক্কার মধ্যেও আমরা প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯৪ ভাগ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। মাথাপিছু আয়ও বৃদ্ধি পেয়ে ২৫১১ মার্কিন ডলার হয়েছে। জিনিসের দাম বাড়লেও মানুষের আয় বেড়েছে। দারিদ্র্যসীমাও হ্রাস পেয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপি-জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকতে বিদেশ থেকে কোনো জিনিস কেনার সময় ১০ টাকার জিনিস ২০ টাকায় কিনে বাকি ১০ টাকা পকেটে ঢুকাতো। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে সেটা হয় না। আমরা বরং দাম কমিয়ে আনি।

সময় মতো প্রজেক্ট শেষ না হওয়ার বিষয়ে জি এম কাদেরের বক্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা পায়রা পাওয়ারপ্লান্ট আট মাস আগে উদ্বোধন করেছি। এতে প্রায় ৮০ কোটি টাকা বেঁচে গেছে। আমরা প্রত্যেকটি কাজ আগে করি, কিছু টাকা বাঁচাই। কিছু কিছু জায়গায় কাজ হয়।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর